ইভিএম যে ভাবে নিজের পক্ষে ফলাফল দেয়

ইভিএম যে ভাবে নিজের পক্ষে ফলাফল দেয়

আসন্ন নির্বাচনে যেসব ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহৃত হবে তা বাংলাদেশে তৈরি। এই মেশিন তিন ফেইজ বা ধাপে তৈরি হয়েছে। প্রথম দুই ধাপ সম্পন্ন করেছে বুয়েট আর সর্বশেষ ধাপ সম্পন্ন করেছে Bangladesh Machine Tools Factory Ltd (BMFT)। এই মেশিনে কাজ করে বোথ হার্ডওয়্যার আর সফটওয়্যার/ফার্মওয়্যার এর মাধ্যমে। আর এই ফার্মওয়্যার দ্বারা খুব সহজেই রেজাল্ট মেনুপুলেট করে ফেলা যায়। প্রথম দুই ধাপে যা দেখানো হয়েছে বা করা হয়েছে খুব সহজে তৃতীয় ধাপে যেয়ে ফার্মওয়্যার এর কোড বদল করে মেশিনকে নিজ ইচ্ছানুযায়ী ম্যানুপুলেট করা সম্ভব।

আমার কথাকে বিশ্বাস করতে পারেন। আমি নিজেও ইঞ্জিনয়ার, প্রচুর ফার্মওয়্যার লিখেছি, যা দিয়ে হার্ডওয়্যার ম্যানুপুলেট করেছি, এমনকি মিসাইল পর্যন্ত। এটা পুরোটাই কোডের খেলা।

আপনি আমাকে বলুন আপনি কি চান? ফার্মওয়্যার কোড এমনভাবে লিখব যা মেশিন যখন রান করবেন আউটপুট বা রেজাল্ট আপনার মনের মতন হবে। আপনি ভিন্ন রেজাল্ট চান? নো প্রব্লেম… আপনি রাতের জায়গায় দিন চান? নো প্রব্লেম….

উপরে দেখাবো রাত, বের হবে দিন। ধানের শিষের বাটনে প্রেস করলে নৌকায় পক্ষে গননা চান? নো প্রবলেম। আপনি পেপার স্লিপ আর ভোট গননার মাঝে ডিফারেন্স চান? নো প্রবলেম। আপনি খালি বলুন আপনি কি চান, কোড এমন ভাবে লিখব যে মেশিন আপনাকে তাই দিবে। আমি কোড লিখে যেসব মেশিন কন্ট্রোল করেছি তার তুলনায় ইভিএম মেশিন একেবারে প্রিমিটিভ, বাচ্চাদের খেলনার মতো। এটা খুবই সিম্পল মেশিন, এর কোড একদম প্রাইমারী লেভেলের, আর একে যেভাবে খুশি লিখে ম্যানুপুলেট করা সম্ভব। একবার কোড লেখার পর তাকে পরবর্তী ধাপে বদলে দিয়ে ব্যবহারের আগে ফাইনাল মেশিনে সেই কোড আপলোড করে দেয়া কোন ব্যাপারই না।

বিএমএফটি এই মেশিন আন্তর্জাতিক বাজারের চাইতে বেশি দামে বানিয়েছে বলে খবরে প্রকাশ হয়েছে। এখানে প্রশ্ন আন্তর্জাতিক বাজারে কম দামে মেশিন এভেইলেবল থাকতে কোন উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সরকার এই মেশিন দেশের ভিতর বেশী দামে বানিয়েছে? আর এর সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তর হচ্ছে বাইরের মেশিনের ফার্মওয়্যার বদল করে রেজাল্ট নিজ ইচ্ছানুযায়ী তৈরি করার জন্য ঠিক যে মেশিন কিনবে তার হার্ডওয়্যার আর ফার্মওয়্যার এর ডিটেইলস জানা লাগবে, ‘র’ কোড তার কম্পাইলার ইত্যাদি সেই মেশিন প্রস্তুতকারী কোম্পানিকে বাংলাদেশকে দিতে হবে। বা বাংলাদেশের ফার্মওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে মেশিনের ভিতরের মাদারবোর্ডের ইলেকট্রিকাল ডিজাইন এর পুরা ডিটেইলস থাকতে হবে। যা কখনও বাইরের মেশিন প্রস্তুত কারক দেশ বাংলাদেশ সরকারকে দিবে না। কারন এটা তাদের ইন্টালেকচুয়াল প্রপার্টি।

তাই সেক্ষেত্রে মেশিন ব্যবহার করে ভোটের রেজাল্ট নিজ ব্যাংকে তুলতে সবচেয়ে সহজ রাস্তা হচ্ছে নিজেরাই মেশিন তৈরি করা, নিজেরাই কোড লেখা। দুইটা পয়সা বেশী গেলেও এতে করে ইচ্ছানুযায়ী ভোট দেয়া আর রেজাল্ট গননা সম্ভব হবে। আপনারা উপরে দেখবেন এক আর ভিতরে হবে আরেক। নর্মালি, আমি হয়ত প্রচুর গর্ববোধ করতাম বাংলাদেশ নিজেদের তৈরি ইভিএম মেশিন ব্যবহার করতে যাচ্ছে, কিন্তু যেখানে মানুষকে নিজের ভোট নিজেকে দিতে হয়না, দিলেও ব্যালট বাক্স আগে থেকেই সিল মারা ব্যালোটে ভরে রাখা হয়, যেখানে নির্বাচনে কারচুপির সাগর পরিমান পূর্ব উদাহরন, সেখানে নিজেদের বানানো ইভিএম মেশিন এবার সাঙ্ঘাতিক কারচুপির ইঙ্গিত দিচ্ছে। বলতে পারেন সিলমারার কষ্ট কমাতেই এই আয়োজন।

এখন এটাও শোনা যাচ্ছে যে, যেখানে ইভিএম মেশিন ব্যবহার করা হবে সেসব জায়গায় সেনা মোতায়েন করা হবে। এই সাহস্যকর তথ্য দিয়ে জাতি কি করবে?  সেনা বাহিনী অথবা যায়হোক…… সকল কারচুপি ঐ মেশিনের ভিতরের ১০ ০১০০১১০০০১১০… ডিজিটাল কোডে। মেশিনের বাইরে নিউক্লিয়ার মিসাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও আর্মির বাপের সাধ্য নাই কারচুপি ধরার । আশা করি ইভিএমের কেরামতি আমরা দেখতে পারব। আর এটা নিয়ে আশা বা হতাশার কিছু নাই। এটাই ডিজিটাল স্বৈরতন্ত্র।