ইসরায়েল, ইহুদি ব্যতিত অন্য কোন নাগরিকের রাষ্ট্র নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের যায়নবাদী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেদেশে অবস্থানরত ফিলিস্তিন-আরব গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্যে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
বক্তব্যটি তার ইন্সট্রাগ্রাম থেকে পাওয়া গিয়েছে। গত বছরে পাশ হওয়া এক বিতর্কিত আইনের উদ্ধৃতি দিয়েই নেতানিয়াহু এ মন্তব্য করেন। আইনে বলা হয়েছে ইসরায়েল শুধু মাত্র ইহুদি জাতির রাষ্ট্র এবং তারাই এদেশে পূর্ণ অধিকার ভোগ করবে।
আইনটিতে আরবি ভাষাকেও অবজ্ঞা করা হয়েছে। আরবি ভাষার দাপ্তরিক মর্যাদা খারিজ করে ‘বিশেষ ভাষা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। হিব্রু ভাষাকে একমাত্র দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করে আইনে বলা হয়েছে “ইসরায়েল ইহুদিদের একমাত্র ও ঐতিহাসিক মাতৃভূমি এবং কেবল ইহুদিরা নিজেদের আত্মনির্ধারণ করতে পারবে ও বিশেষ অধিকার পাবে।”
অবিভিক্ত জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীও ঘোষণা করা হয়। নেতানিয়াহু মূলত ইসরায়েলি অভিনেত্রী রোতেম সেলার সমালোচনার জবাবেই ইন্সটাগ্রামে এই মন্তব্যটি সরাসরি করেছেন। সেলা ইন্সটাগ্রামে ইসরায়েলের সংস্কৃতি মন্ত্রী মিরি রেগেভের অতি ডানপন্থী বক্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন। রেগেভ সেদেশে কট্টর ফিলিস্তিন বিরোধী নেতা হিসেবে সেদেশে চিহ্নিত।
সেলা বলেন, “কবে এদেশের সরকার বলবে যে এদেশের সকল মানুষের এবং আমরা সবাই-ই সমান?” নেতানিয়াহু ও সেলার ভিন্ন মন্তব্য দু’টিই ঝড় তোলে ইসরায়েলে। নেতানিয়াহু মন্ত্রীসভার বৈঠকের শুরুতে তার মন্তব্যর কথা উল্লেখ করেন।
নেতানিয়াহু ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তার দেশের ফিলিস্তিনিদের উপর ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগ আসে। সেদেশে ফিলিস্তিনিরা জন্যসংখ্যার ১৭ ভাগ। সেদেশে এখন কট্টর ডানপন্থী শাসন কায়েম হয়েছে।
নেতানিয়াহু সর্বদায় বিরোধী দলের উপর দোষারোপ করে থাকে। তার মতে তার বিরোধী শক্তি ফিলিস্তিনি ও আরবের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে এবং তাদের সুবিধা নিশ্চিত করবে যা ইহুদিদের জন্য হুমকি স্বরূপ। বর্তমানে তার সরকার নানা রকম দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত। এই সুযোগে সেখানে তাদের মধ্যপন্থী বিরোধী জোট একটি শক্ত অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। ঐ জোটের প্রধান সাবেক সেনাপ্রধান বেনি গান্টজ ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ইয়ার লাপিড।
নেতানিয়াহু বরবরই তাদের বামপন্থী হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসলেও বিরোধী শিবিরে সশস্ত্র বাহিনীর তিনজন সাবেক প্রধান থাকায় প্রমাণিত হচ্ছে না। আরব সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক দল যদি যে কোনভাবে জোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে তা সেদেশের ডানপন্থী নেতাদের জন্য কখনই মেনে নেওয়ার মত হবে না।
এদিকে নেতানিয়াহুর সরকার ইতিহাসের সবচেয়ে কট্টর ডানপন্থী সরকার হিসেবেই পরিচিত সেদেশ। সামনের নির্বাচনেও নেতানিয়াহুর ইচ্ছা একই রকম ডানপন্থী জোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করা।