ভোট গ্রহণের সময় আরও ৪ ঘণ্টা বৃদ্ধি, নির্বাচনকালীন তথ্য সংগ্রহে মিডিয়ার স্বাধীনতা, প্রতিটি কেন্দ্রে সকালবেলা ব্যালট পেপার নেয়াসহ সাতদফা দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করেছে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল ব্যতীত স্বতন্ত্র ও বিভিন্ন প্যানেলের নেতৃবৃন্দ। পরে তারা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাত করেন।
উপাচার্যের সাথে সাক্ষাত শেষে ভিসি কার্যালয়ের সামনে তারা তাদের দাবি-দাওয়া এবং উপাচার্যের সাথে সাক্ষাতের কথা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।
এর আগে আজ রবিবার দুপুর সাড়ে তিনটা নাগাদ বাম জোট মনোনীত ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ মনোনীত ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নুর, স্বতন্ত্র জোট স্বতন্ত্র জিএস পদপ্রার্থী এ. আর. এম আসিফুর রহমান, স্বতন্ত্র জোট মনোনীত ভিপি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান তাদের সমর্থকদের নিয়ে মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল নিয়ে গিয়ে ভিসি কার্যালয় ঘেরাও করেন।
এসময় তাদের সমর্থকেরা মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ – ‘আরোপ করা চলবে না’, ‘নীল নকশার নির্বাচন — ছাত্রসমাজ মানবে না’, ‘রড-হাতুড়ি-হেলমেটের- জবাব হবে ব্যালটে’, ‘ভোট ডাকাতির নির্বাচন – ছাত্রসমাজ’ প্রভৃতি বলে স্লোগান দিতে থাকে।
দুপুর তিনটা চল্লিশের দিকে ভিসি ড. আখতারুজ্জামান কার্যালয়ে আসেন। এরপর তিনটা পঁয়তাল্লিশ মিনিটে ভিসির কক্ষে প্রবেশ করেন নুরুল হক নুর, এ. আর. এম. আসিফুর রহমান, অরণি সেমন্তি খান ও লিটন নন্দী।
তাদের সাতদফা দাবি হলো : ভোট গ্রহণের সময় চারঘণ্টা বাড়ানো, পোলিং বুথের অভ্যন্তরে ব্যাতীত সকল নির্বাচনী এলাকায় মিডিয়ার তথ্য সংগ্রহের স্বাধীনতা, ভোট কেন্দ্রে আসতে নিরুৎসাহিতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, পোলিং অ্যাজেন্ট নিয়োগের ব্যবস্থা, পর্যবেক্ষক ও ভোটাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা, হলগুলোতে সকালবেলা ব্যালট পেপার পৌঁছানো এবং ভোট গ্রহণের দিন সকাল বেলা সকল রুটে বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
ব্যালট বাক্স নিয়ে কারচুপির আশঙ্কার কথা জানিয়ে স্বতন্ত্র জোট মনোনীত ভিপি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান বলেন, ব্যালট বাক্সগুলো এখনই হলগুলোতেনিয়ে যাচ্ছে, অথচ এগুলো সকাল বেলা নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। এখনই এগুলো নিয়ে যাওয়া মানে রাতব্যাপী কারচুপি হবে।
দাবি আদায়ের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছে কি না জানতে চাইলে অরণি সেমন্তি খান বলেন, বিভিন্ন ব্যাপারে আশ্বাস দেয়া হলেও, বারবার স্মারকলিপি দেয়া হলেও, আমাদেরকে বারবার আশাহত করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে আহ্বান জানিয়ে স্বতন্ত্র জিএস পদপ্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান বলেন, “আমরা মনে করি, আমরা এখানে যারা আছি, তারা সবসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলেছি। আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষের শক্তি। আপনারা ভোট দিতে আসুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি।”
নুরুল হক নুর বলেন, আমরা এখানে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা রয়েছি, তবে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং ছাত্রদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করণে আমরা সবাই একতাবদ্ধ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২৮ বছর পর আগামীকাল অনুষ্ঠত হতে যাচ্ছে বহুল কাঙ্ক্ষিত ডাকসু নির্বাচন। ছেলেদের ১৩ ও মেয়েদের ৫ হলে মোট ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার ২৫৬ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ২৬ হাজার ৯৪৪ এবং নারী ১৬ হাজার ৩১২ জন। আগামীকাল ভোট গ্রহণ চলবে সকাল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত।