যুদ্ধের সূচনাটা তাহলে ভারতই করল! আজ মঙ্গল ভোরে ভারতীয় যুদ্ধবিমান সীমান্তরেখা পেরিয়ে পাকিস্তান ভূখণ্ডে বোমাবর্ষণ করেছে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর ১২টি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানি ভূখণ্ডে কমপক্ষে এক হাজার কেজি বোমাবর্ষণ করছে। এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বালাকোট অঞ্চলে সবচেয়ে বড় জৈশ প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করেছে ভারত।
আজ এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেশব গোখলে বলেন, ‘মঙ্গলবার ভোরে ভারতীয় বিমানবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে যে অভিযান চালিয়েছে তাতে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘১৪ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের সন্ত্রাসী সংগঠন জৈশ-ই-মুহাম্মেদ পুলওয়ামাতে সন্ত্রাসী হামলা চালালে আমাদের ৪০ জওয়ান নিহত হয়েছিল। এর আগে পাঠানকোটেও জৈশের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছিল। পাকিস্তান সবসময় তাদের দেশে এসব সংগঠনের উপস্থিতির কথা অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানকে কয়েকবার এ নিয়ে প্রমাণ দেয়া হলেও তারা সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পাকিস্তানের অবস্থান দেখে আমরা এ নিয়ে পদক্ষেপ নেয়ার কৌশল অবলম্বন করেছি। আজ সকালে বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক করা হয়েছে যাতে জৈশ কমান্ডারসহ অনেক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।’
অন্যদিকে, আজ ইসলামাবাদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘ভারত যা করেছে, তা আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন। এতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিপদাপন্ন। পাকিস্তানের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। এই ঘটনার জবাব দেয়ার সব রকমের অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের। পাকিস্তান সেই জবাব দেবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘ভারতীয় বিমানবাহিনী মুজাফফারাবাদে অনুপ্রবেশ করেছিল। কিন্তু পাকিস্তান বিমানবাহিনী তৎক্ষণাৎ কার্যকর ভূমিকা পালন করে তাদের প্রতিহত করে ফিরিয়ে দিয়েছে।’ এ সময় ভারতের একটি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছে বলেও দাবি করেছেন মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ‘জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ’র জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। এই বৈঠকেই পাকিস্তানের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এই বিমান হামলার মধ্য দিয়ে ভারত শুধু সীমান্তরেখা অতিক্রমের দুঃসাহসই করেনি বরং দক্ষিণ এশিয়াকে রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে যাচ্ছে। এখন দেখার বিষয় পাকিস্তান এর জবাব কতটুকু বিস্ফোরক দিয়ে দেয় আর ফলাফলইবা কি আসে?