সম্প্রতি মিশর সরকার সেদেশের রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুডের ৯ জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে। এই মৃত্যুদণ্ডের জের ধরে মিশরকে কড়া সমালোচনা করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। মিশোরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন “তারমত একজনের সাথে আমি কথাও বলব না।”
বুধবার ওই নয়জন কে ফাঁসি দেয়া হয়। ২০১৫ সালে মিশরের আদালত তাদের মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করা হয়েছিল। শনিবার সিএনএন কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এরদোগান বলেন “তারা নয়টি তরূনকে হত্যা করেছে। এটা আমরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না।”
তিনি আরো বলেন “ হ্যা আমরা এটা মানি যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করাটা ছিল একটি বিচারিক সিদ্ধান্ত। তবে সেদেশের সরকার, নির্বাচন, বিচার সহ সকল ব্যবস্থায় সম্পুর্ণ অর্থহীন। সেখানে একটি সর্বগ্রাসী স্বৈরাচার ব্যবস্থা বিদ্যমান।“
মিশরের প্রেসিডেন্ট সিসির সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন “ আমি কখনো সিসির মত একজনের সাথে কথা বলি না। বলি নাই। যারা অবাক হয়েছেন এটা শুনে তাদের জেনে রাখা ভালো তার মধ্যস্থতাকারীরা আমার এখানে আসে তারাই কথা বলে”।
২০১৩ সালে সিসির ও মিশরের সেনা বাহিনী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোর্সিকে হটিয়ে মিশরের রাষ্ট্রক্ষমতার দখল নেয়। উল্লেখ্য প্রেসিডেন্ট মোর্সির সরকার একটি গণতান্ত্রিক সরকার ছিল যা জনগনদের ভোটের মাধ্যমেই সেদেশে ক্ষমতায় আসে। এর পর থেকেকেই তুরস্কের সাথে মিশরের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে।
এরপর থেকে শতশত মোর্সি সমর্থকদের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। স্বয়ং মোর্সি সহ মুসলিম ব্রাদারহুডের সকল উচ্চপদস্থ নেতাদের কে আটক করা হয়। তারা সবাই এখন বিচারাধীন রয়েছেন।
২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে মোর্সিকে হটানোর দুই মাসের মাথায় মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুডকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং এই সংগঠনের সবরকম কর্মসূচিকে সম্পূর্ন ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়।
মুসলিম ব্রাদারহুডের অনেক কয়েদিকে গণফাঁসিও দেয়া হয়। তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সুযোগ দেওয়া হয়নি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুডের সকল বন্দির মুক্তি দাবি করেছেন। তিনি বলেন “সবার আগে তাকে মুসলিম ব্রাদারহুডের সকল নেতা, কর্মি ও সমর্থকদের নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে। তাদের মুক্তি দেওয়া না হলে সিসির সাথে আলাপ করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।”
এই বিষয়ে এরদোয়ান পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোরও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন “সিসি যেভাবে এতজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে যাচ্ছে এগুলো দেখেও পশ্চিমা দেশগুলো অন্ধের মত নিরব রয়েছে। কোথায় সেই পশ্চিমারা? এই বিষয়ে একবারও কি তাদের কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছেন? অন্যদিকে আমার দেশে যখন কোন মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হয় তখনই তারা ‘হত্যা’ ‘হত্যা’ বলে চিৎকার শুরু করে।”
এদিকে এমিনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক বিবৃতিতে জানা যায় যাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শুধুই মারামারির বা শারিরিক কোন্দলের অভিযোগ ছিল।