প্রহসনের নির্বাচন শেষ হয়েছে দুই মাস প্রায় পেরিয়ে যাচ্ছে। এখনো কোন আন্দোলন করতে পারেনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এমন পরিস্থিতিতে এই রাজনৈতিক জোট আয়োজন করেছে ‘গণশুনানি’। আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের শফিউর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই গণশুনানি। গণশুনানি নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা বিচারক না, কোনো বিচার করার ক্ষমতা আমাদের নেই। সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে গণশুনানি জনগণের জন্য। যাতে তারা নিজ বিবেচনায় বিচার করতে পারেন। মূলত বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে। গণআদালত যেটা বলা হয়, সেটার বিচার জনগণ করবে।
এই শুনানিতে সারাদেশ থেকে আসা ঐক্যফন্টের প্রার্থীরা অংশ নেন। এ সময়, নির্বাচনে নানা অনিয়ম তুলে ধরেন তারা। আন্দোলন করতে ব্যর্থ হওয়ায় অনেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়ী করেন। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি দাবি করেন প্রার্থীরা।
গণশুনানির সব বক্তব্য বই আকারে প্রকাশ করার কথা জানিয়ে ঐক্যফ্রন্ট আহ্বায়ক বলেন, এবার যে নির্বাচন হয়েছে, সেটা নিয়ে প্রার্থীদের অনেকে ট্রাইব্যুনালে মামলা আকারে ফাইল করেছেন। নির্বাচনে কী ঘটেছে, সেটা জনগণকে জানানো দরকার বলে মনে করছেন দলের নেতারা। কারণ যে জনগণ ক্ষমতার মালিক, তারা ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চেয়েছিলেন। নির্বাচনে কী ঘটেছিল, কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল, এটা তাদের জানানো উচিত।
গণশুনানির মূল উদ্দেশ্য সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো উল্লেখ করে প্রবীণ এ আইনজীবী বলেন, সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে লেখা আছে, জনগণই ক্ষমতার মালিক।
গণশুনানির শুরুতে রাজধানীর চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও আহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাস করা হয়। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময়, নিহতদের স্মরণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হয়েছে, তা একইভাবে একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি। এই ফ্যাসিস্ট সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একটি প্রহসনের নির্বাচন করেছে। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় থেকে যাওয়া।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকায়, যা ইচ্ছা তা-ই করছে সরকার। তাকে কোনো কিছুর জন্য জবাবদিহি করতে হয় না।
গণশুনানিতে সাত সদস্যের বিচারক প্যানেলের প্রধান হিসেবে আছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন, ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, ড. নুরুল আমিন বেপারী, ড. মহসিন রশীদ, ড. আনিসুর রহমান খান, প্রফেসর দিলারা চৌধুরী ও ড. আসিফ নজরুল।