চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ও ভারত কি যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে? কাশ্মির বিস্ফোরণ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পরাশক্তির মধ্যে দেখা দেয়া উত্তেজনা হ্রাস করতে না পারলে যুদ্ধে রূপান্তরিত হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এতদিন কাশ্মির বিস্ফোরণ নিয়ে ভারতীয় প্রশাসন এবং মিডিয়া পাকিস্তানকে দোষী সাব্যস্ত করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এক রকম যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। পাকিস্তানি শিল্পীদের উপর নিষেধাজ্ঞাসহ ক্রিকেট ক্লাব থেকে ইমরানের খানের ছবি সরানোর মতো ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এছাড়াও বিশ্বকাপে মুখোমুখি না হওয়ার হুমকি দিয়েছে।
এবার পাকিস্তান শিবিরেও যুদ্ধের প্রস্তুতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশটির সরকার সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত থেকে কোনো ধরণের আগ্রাসন বা ভুল আচরনের কঠিন ও সর্বাত্মক জবাব দেয়ার জন্য পূর্ণ সামরিক শক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইমরান খানের প্রশাসন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর কমপক্ষে ৪৪ সেনা নিহত হয়। হামলার পরপরই দায় স্বীকার করে কাশ্মিরি সশস্ত্র সংগঠন ‘জৈশ-ই মুহাম্মেদ’। কিন্তু কোন তদন্ত ছাড়াই ভারতীয়রা পাকিস্তানকে ‘দাঁতভাঙ্গা’ জবাব দেওয়ার দাবি তোলে। যার প্রেক্ষিতে সৃষ্টি হয় নতুন উত্তেজনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে একটি বিবৃতি প্রদান করেন। এতে তিনি সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার ওই নির্দেশ দেন। তিনি ভারতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পাকিস্তান কোনোভাবেই এ ধরণের হামলার সমর্থন দেয়নি। ভারতের মধ্যেই এ হামলা পরিকল্পিতভাবে সংগঠিত করা হয়েছে। ভারত সরকার চাইলে এর তদন্তে পাকিস্তান সাহায্য করবে। একজনও যদি পাওয়া যায় যে পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করে ভারতের বিরুদ্ধে হামলা করেছে তাহলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন ইমরান খান। বিবৃতিতে এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাবও দিয়েছেন ইমরান।
এখন দেখার বিষয়, এই উত্তেজনা ঠিক কোথায় গিয়ে ঠেকে। আর যদি দক্ষিণ এশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণতই হয় তবে আদৌ কাশ্মির ইস্যুর সমাধান হয় কি না?