একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যখন জাতি ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে ব্যস্ত তখন রাজধানীর পুরান ঢাকায় দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। ৬৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ড। এছাড়াও প্রায় ৪১ জনকে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। তারা ঘটনাস্থলে সাঁটানো বোর্ডে আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য উল্লেখ করেছে।
বুধবার ২০ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাত সাড়ে দশটা নাগাদ চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এলাকাবাসী বলছে, ওই ভবনের কারখানা থেকে আগুন ছড়িয়েছে। কারও কারও মতে, বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়ায়। ওয়াহিদ ম্যানসনের নিচতলায় প্লাস্টিকের গোডাউন ছিল। ওপরে ছিল পারফিউমের গোডাউন।
খবর পাওয়ার পরপরই আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম। একটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন।
সাড়ে ৩টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান বলেন, এখানে আসার রাস্তাটির দু’পাশই সরু। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সহজে ঢুকতে পারেনি। তবে শেষ পর্যন্ত কয়েকঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ভবনে দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মোট পাঁচটি ভবনে আগুন লেগে যায়। এখনো আমাদের কাজ চলছে। আমরা কাজ শেষে সার্চ করবো।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান বলেন, এখানে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বানায়। বডি স্প্রেও এখানে বানানো হয়। বডি স্প্রে তৈরির দাহ্য পদার্থে আগুন বেশি ছড়িয়েছে। তবে কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত সে সম্পর্কে এখনো কোন সুনিশ্চিত তথ্য দিতে পারেননি কেউ। তদন্তর পর সেটা পরিস্কার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।