ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নিগ্রহের শিকার হচ্ছে কাশ্মিরিরা

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নিগ্রহের শিকার হচ্ছে কাশ্মিরিরা

ভারত অধ্যুষিত জম্মু ও কাশ্মিরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রায় অর্ধশত সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত জুড়ে ঘৃণ্য প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থান করা কাশ্মিরি নাগরিক ও ছাত্ররা নিগ্রহের শিকার হচ্ছে। এ বিষয়ে কাশ্মিরিদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নির্দেশও দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পুলওয়ামার হামলার পরে জম্মু–কাশ্মিরের ছাত্র-ছাত্রী ও বাসিন্দাদের উপরে হামলার খবর সামনে আসছে। সেজন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে তাঁদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশ, শনিবার উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের একটি হোস্টেলে উন্মত্ত জনতা ঘিরে ধরে। ভয়ে মূল দরজায় তালা বন্ধ করে দেন ২০/২৫ জন নারী আবাসিক। দেরাদুন পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মারমুখী জনতাকে সরিয়ে দেয়। দেরাদুনে কাশ্মিরি তরুণদের অভিযোগ, তাদের ঘর মালিক গোলযোগের আশঙ্কায় ঘর খালি করে দিতে বলেছে। অন্যদিকে, জওয়ানদের মৃত্যুর ঘটনাকে সমর্থন করে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠানোর অভিযোগে দেরাদুন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক কাশ্মিরি ছাত্রকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

অন্যদিকে গণমাধ্যমের একটি সূত্র বলছে, হরিয়ানার আম্বালার এক পঞ্চায়েত ভাড়া বাড়িতে থাকা কাশ্মিরের ছাত্রদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি খালি করার নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

জম্মুতেও কাশ্মিরিরা নানাভাবে হেনস্থা ও নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার জম্মুর বিভিন্ন অংশে পাকিস্তানবিরোধী বিক্ষোভের নামে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা কাশ্মিরিপ্রধান এলাকায় বেছে বেছে হামলা চালায়। ওই ঘটনায় কমপক্ষে ৩৭ জন আহত হন। সিআরপিএফ জওয়ানদের হত্যার প্রতিবাদ জানাতে বজরং দল, শিবসেনার মতো উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের লোকজন সেখানে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এসময় বিক্ষোভকারীরা প্রায় একশ’ যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই ঘটনার পরে সেখানে কারফিউ জারিসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

কাশ্মিরের সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামির অভিযোগ, জওয়ানদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন কোনো আগাম পদক্ষেপ নেয়নি। স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে যথোপযুক্তভাবে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা উচিত ছিল। প্রশাসন ওই পদক্ষেপ না নেয়ার ফলে জম্মুতে দিনভর তাণ্ডব চলেছে। গভর্নরের তত্ত্বাবধানে থাকা প্রশাসনকেই ওই ঘটনার দায়িত্ব নিতে হবে বলেও সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামি মন্তব্য করেছেন। জম্মু-কাশ্মিরের গভর্নর সত্যপাল মালিক রাজ্যবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন।

সূত্র: পারসটুডে