স্বপ্নপূরণ তো একেই বলে! কবি আল মাহমুদ আকাঙ্ক্ষা করতেন, তার মৃত্যু যেন মুসলিম সমাজের ‘সাপ্তাহিক ঈদ’ হিসাবে গণ্য জুম্মাবার অর্থাৎ শুক্রবার হয়। প্রভুর করুণায় ধার্মিক কবির সেই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হল। দীর্ঘদিন নিউমোনিয়া এবং বার্ধক্যজনিত রোগভোগে কাটানোর পর ১৫ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার রাত্রি ১১:০৫ নাগাদ চরাচরের মায়া কাটিয়ে অন্য ভুবনে পাড়ি দিলেন তিনি। ‘স্মৃতির মেঘলাভোরে’ নামক এক কবিতায় কবি আল মাহমুদ ব্যক্ত করেছেন শুক্রবারে মৃত্যু-ইচ্ছা। ‘জবান’ পরিবারের সকলে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কামনা করছে, কবির রুহের মাগফিরাত করে প্রভু যেন তাকে জান্নাতুল ফিরদৌস নসিব করেন! ১৭ ফেব্রুয়ারি, রবিবার কবির পিতৃভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্রামে জানাযা এবং গোর সম্পন্ন হবে।
আলোচ্য কবিতাটি নিম্নে বিধৃত হল:
স্মৃতির মেঘলাভোরে
কোনও এক ভোরবেলা রাত্রিশেষে শুভ শুক্রবারে
মৃত্যুর ফেরেস্তা এসে যদি দেয় যাওয়ার তাকিদ;
অপ্রস্তুত এলোমেলো এ-গৃহের আলো অন্ধকারে
ভালোমন্দ যা ঘটুক মেনে নেবো এ আমার ঈদ।
ফেলে যাচ্ছি খড়কুটো, পরিধেয়, আহার, মৈথুন–
নিরুপায় কিছু নাম, কিছু স্মৃতি কিংবা কিছু নয়;
অশ্রুভারাক্রান্ত চোখে জমে আছে শোকের লেগুন
কার হাত ভাঙে চুড়ি? কে ফোঁপায়? পৃথিবী নিশ্চয়।
স্মৃতির মেঘলাভোরে শেষ ডাক ডাকছে ডাহুক
অদৃশ্য আত্মার তরী কোন ঘাটে ভিড়ল কোথায়?
কেন দোলে হৃদপিণ্ড, আমার কি ভয়ের অসুখ?
নাকি সেই শিহরণ পুলকিত মাস্তুল দোলায়!
আমার যাওয়ার কালে খোলা থাক জানালা দুয়ার
যদি হয় ভোরবেলা স্বপ্নাচ্ছন্ন শুভ শুক্রবার।