পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ঋণের পরিমাণ ২২.০১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর আগের প্রতিবেদন অনুযায়ী মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৯.৯৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে এই তথ্য।
কর হ্রাস অভ্যন্তরীণ ও সামরিক কর্মসূচিতে ব্যয় বৃদ্ধির ফলে ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই ঋণের উর্ধ্বগতি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অর্থনীতিবীদগণ। তাদের মতে ২০১৭ সাল থেকে এই ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশনের প্রধান মাইকেল পিটারসন বলেন “জাতীয় ঋণ এখন অনেক বড় একটি বিষয় কারণ এটি আমাদের জাতীয় অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি।” তিনি আরও জানান ঋণের পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে দৈনিক সুদ এখন এক বিলিয়ন ডলারের চেয়েও বেশি। তিনি বলেন “এই যে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ আমরা নিচ্ছি, এই ঋণের বোঝা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিকে বইতে হবে। পরবর্তীতে দেখা যাবে গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগে অর্থ যোগান দেওয়া তখন আর সম্ভব হবে না।”
পিটারসন আরও বলেন “এই ঋণের কারনে প্রতিবছরে আমাদের জাতীয় বাজেটে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস বলছে এবছর ঘাটতির পরিমাণ ৮৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা গত বছরের মোট ঘাটতির তুলনায় ১৫.১ শতাংশ বেশি। গত বছর এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৭৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।” এদিকে কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস (সিবিও) জানিয়েছে ২০২২ সাল নাগাদ এই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার বা তার চেয়ে বেশি। ২০২৯ সাল পর্যন্ত ঘাটতি এক ট্রিলিয়ন ডলারের চেয়ে কমানো সম্ভব হবে না।
এদিকে অর্থনীতিবিদেরা জানিয়েছে এর ফলে দেশে দ্রব্যমূল্যের ব্যাপক উর্ধ্বগতি হবে। বিশেষ করে সামাজিক নিরাপত্তা, ঔষধ খাত ও শিশু পণ্যে এর প্রভাব বেশি পড়বে। এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে কর হ্রাসের কারণে যে ঘাটতি হচ্ছে তা অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে ঠিক করা হবে। যদিও সেদেশে গণ্যমান্য অর্থনীতিবিদগণ তা মানতে নারাজ। তারা জানিয়েছেন এভাবে চলতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের সামনের দিনগুলো অর্থনৈতিক ভঙ্গুর অবস্থাতেই কাটবে।