এই সময়
এ কোনও গোলাপের প্রহর নয়
ড্রাগনেরও প্রহর নয়;
এমন সময় আমি জলের রহস্যের মুখে গিয়ে দাঁড়াই
আর চুঁইয়ে পড়া জলের থেকে নক্ষত্রের চলাচলের শব্দ শুনতে পাই!
পৃথিবীর পোশাক
সাদা পোশাকে ছিল পৃথিবী
সন্ধ্যা নামছিল
আমি দৌড়ে গিয়ে সূর্যের ওপর উঠলাম
আর কোনও প্রহর নেই…
এ যাবৎ আমার সব দুঃখের
মৌল উপাদানগুলোর কথা বলতে বলতে
কী আশ্চর্য! আমি ঘুমিয়ে পড়লাম…
দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেল বায়ুমণ্ডলের সমস্ত রং
যা ছিল আমার জন্মের বাসরশয্যা
গলির ভেতরে ফেরিওয়ালারা ঢুকে দেখল শহরটা নেই!
বাড়িঘর যেন ভগ্নস্তুপ
দালানে দু’জন রক্ত ঢালছে
গৃহযুদ্ধে আহতদের উদ্দেশ্যে
অদূরে একটি গাছ স্বজন হারিয়েছে-
তারই ছায়া পড়েছে আকাশে
আর রান্নাঘর থেকে ভেসে আসছে প্রেমের টক স্বাদ
তারপর সামুদ্রিক প্রবাহ…
মৃত দ্রাঘিমারেখা
নক্ষত্রের চরাচর ফাঁকা।
যে কয়েকদিন আমি বেঁচে ছিলাম
সাদা পোশাকে পৃথিবী আমাকে অনুসরণ করেছে
এখনও ভয় এবং ফাঁপা শব্দে তৈরি শূন্য আমাকে প্রদক্ষিণ করছে!
জীবনবীক্ষা
যতবার আমি জীবনের কথা ভেবেছি
আমাদের জীবন অদৃশ্য হয়ে যায়
খুঁজে পাই না সূর্যকে;
জলের প্রতিবিম্বের নিচে গিয়ে দাঁড়াই
আর চুঁইয়ে পড়া জলের শব্দ থেকে
শুনতে থাকি বিরামহীন নক্ষত্রের চলন।
আগামী বছরগুলো পুরাতন গল্পের
ভিতর দিয়ে ভাসিয়ে দিই আমার হাত
সারিবদ্ধ পোতাশ্রয়গুলো জেগে থাকে,
সমগ্র আকাশে ফাঁকা মাঠের জাঙালের মতো
দেখা যায় রাস্তার নিদর্শনস্বরূপ
কক্ষপথের মুখে ভাঙা বাড়ি
বিরল প্রতিভার একটি ছায়ার ভিতরে আমরা ঢুকে যাই!
নদীহীন দুইপারে অন্ধকার
অনেক রাত্রিতে বিগলিত হয় কাদা
প্রকৃতি হাত রাখে আমার মাথার ওপর
আর অন্যমনস্ক হয়ে আছে সব গাছ।
চিরনিদ্রায় শায়িত আমি
মেঘ ডাকছে আমার হৃদয়ে
ভারাক্রান্ত আগামীকালের বৃষ্টির শব্দ
নদীহীন দুইপারে অন্ধকার
হাওয়া ফালাফালা করে দিচ্ছে বনের কাঠ
সূর্য একটি গলির মুখে দাঁড়িয়ে ছন্নছাড়া একাকী
আর গলির ভিতরে তার দেহরেখায়
চলাচল করছে অগণিত নৌকা।
অনিশ্চয়তার মধ্যে অপেক্ষা করছিল আমাদের জীবন
পাথরের ভিতরে আমি বেঁচে ছিলাম
আমার শ্বাসপ্রশ্বাসে ছিল অগ্নিশিখা
আর হেঁটে বেড়ানো মুহূর্তগুলো ঠুকেঠুকে দিত হাঁটুর নিচের ঘন্টা।
যখন আমি ছিলাম না মনে পড়ল
সেই সময়ের দু’-একটা কথা
আর কিছু নয় অনন্ত দূরত্বের পাশাপাশি
দু’টি কবরের মতো দু’টি নক্ষত্রের অবস্থান,
এখন গভীর রাত
বিগলিত হচ্ছে নিস্তরঙ্গ ঝর্ণার কাদা!