ডাকসু নিয়ে বিভিন্ন দাবিতে ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশ

ডাকসু নিয়ে বিভিন্ন দাবিতে ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশ

ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র প্রশাসনিক ভবনে স্থানান্তর, হলগুলোতে প্রশাসনিকভাবে সিট বন্টন, বিগত ২৮ বছরের ছাত্রবিমুখ সকল সিদ্ধান্ত বাতিলসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ।

আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনুষ্ঠিত ছাত্র সমাবেশ থেকে তারা এসব দাবি জানায়। এছাড়া সমাবেশ থেকে ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানায় তারা।

ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ্‌র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ছাত্রসমাবেশে বক্তব্য রাখেন ডাকসুর সাবে সহ-সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দৌজা।

তিনি বলেন, বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাংলাদেশের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নামছে। কিন্তু, শুধু পানির স্তরই নয়; বাংলাদেশে জ্ঞান ও গণতন্ত্রের স্তরও দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে।

ডাকসু নির্বাচন যাতে ‘নৈশকালীন নির্বাচন’এ পরিণত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে নৈশকালীন শিক্ষা চলে, নৈশকালীন নির্বাচনও চলে। নৈশকালীন শিক্ষা নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নাই; কিন্তু নৈশকালীন নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আপত্তি আছে। ডাকসু নির্বাচন কারোর দয়ার দান নয়; এটি ছাত্রদের অধিকার।”

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকি বলেন, কর্তৃপক্ষ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা এটাকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু, আমরা পরিবেশ পরিষদের মিটিংগুলোতে বলেছিলাম, এখন হলগুলোতে ক্ষমতাসীনদের দখলদারিত্ব রয়েছে, গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি; এমতাবস্থায় নির্বাচন দেয়া হলে ছাত্ররা তাদের নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারবে না। তাই হলগুলোতে নয়; আমরা চাই, একাডেমিক ভবনগুলোতে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হোক।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাবি শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, যদি আরও একটি ৩০ই ডিসেম্বরের মতো নির্বাচন না চাই, তবে অবশ্যই ভোটকেন্দ্র অনুষদভিত্তিক হতে হবে। তাই আমরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাবো, যাতে করে ভোটকেন্দ্র হলগুলোর বাইরে নিয়ে আসা হয়।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নূরুল হক নূর বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির কাছে গর্বের ও অহংকারের জিনিস। আমরা চাই না এটা কোনওভাবেই কলংকিত হোক। প্রায় দুটো দাবি, যেগুলোতে ছাত্রসংগঠনগুলো একাত্ম হয়েছে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন, ছাত্রদের নিরাপত্তাদান ও হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপন যেন সিন্ডিকেট সভায় নিশ্চিত করা হয়।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাজীব দাসের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন সুজন,  জে এম জিলানীসহ প্রমুখ।

এদিক বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারশনও প্রায় একই দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। দুপুর একটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র, প্যানেল ভাবনাসহ নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তারা।

এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, সকল শিক্ষার্থীর নিরাপদে ভোট দেয়ার পরিবেশ নিশ্চিত করতে তারা ডাকসু নির্বাচনে হলে নয়, অনুষদে ভোটকেন্দ্র চায়। বিজ্ঞপ্তিতে তারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী  শক্তিবাদে আপামর ছাত্রসমাজ,  প্রগতিশীল ছাত্রজোট, বিতার্কিক, শিল্পীদেরকে নিয়ে আটত্রিশ হাজার শিক্ষার্থীদের পক্ষে বৃহত্তর ইউনিট গড়বার চেষ্টা করছে বলে জানায়।