ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলীয় নেতা হুয়ান গুইডো নিজেকে দেশটির ‘অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা দিয়ে অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে দেশটিকে। অন্যদিকে গুইডোকে সমর্থন দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে দেশ থেকে বহিস্কারসহ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
নিকোলাস মাদুরো এই ঘটনাকে মার্কিন মদদে অভ্যূত্থান উল্লেখ করে গুইডোকে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত বছর নির্বাচনে জয়লাভ করে নিকোলাস মাদুরো দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর থেকে ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে। মাদুরো জয়লাভ করলেও বিরোধীরা তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। অনেক দেশ মাদুরোকে স্বীকৃতি না দেয়ায় তা আরও বেশি জটিল হয়ে ওঠে। এ বছর ১০ জানুয়ারি মাদুরো সরকার গঠন করলে বিরোধীরা আন্দোলন শুরু করে।
গুইডো’র প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণার ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন সংকটের সৃষ্টি করেছে। গতকাল বুধবারই ঘোষণার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প গুইডোর পক্ষ নিয়ে তাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, গুয়াইদো জনগণের পক্ষে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। আইনের শাসন ও স্বাধীনতার দাবিতে মাদুরোর বিরুদ্ধে তার এ অবস্থান। গুইডো সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ব্রাজিল, কলম্বিয়া, চিলি, পেরু ও আর্জেন্টিনার মতো বেশ কয়েকটি দেশ সমর্থন দিয়েছে। তারা ভেনেজুয়েলাকে স্বৈরশাসন মুক্ত করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
অন্যদিকে এন্টি আমেরিকান দেশগুলো নিকোলাসের পাশে দাঁড়িয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান মাদুরেকে ফোন করে বলেছেন, “মাদুরো ভাই আমার, তুরস্কের জনগণ আপনার পাশে আছে”। এছাড়াও মাদুরোকে সমর্থন দিয়েছে রাশিয়া, ইরানসহ বেশকিছু দেশ। এক টুইটবার্তায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন লিখেছেন, সেনাবাহিনী স্বঘোষিত সরকারকে মেনে নেবে না। গুয়াইদোর সরকার ঘোষণাকে ‘অসৎ স্বার্থ’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি বলেছেন, “তেহরান ভেনিজুয়েলার বৈধ সরকারকে সমর্থন করছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপের প্রয়াস, অবৈধ কোনো পদক্ষেপ বা জনগণের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টার মুখে এ সমর্থন দেয়া হবে”।
এখন দেখার বিষয় ভেনেজুয়েলার অখ্যাত রাজনীতি নিয়ে আন্তার্জাতিক মহলের কূটনৈতিক লড়াই কতদূর যায়?