পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোতে প্রায়ই শোনা যায় নারী পুরুষ সমতার নতুন নতুন নীতি কিংবা আন্দোলনের খবর। আর এসকল আন্দোলন গুলোকেও নানা জাঁকজমক ভাবেই প্রচার করা হয়। লৈঙ্গিক সমতা নিয়ে তেমনই একটি প্রচারণা চালিয়েছে ব্রিটেন এর দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘কমিক রিলিফ’। প্রচারণাটির টাইটেল দেওয়া হয় ‘স্পাইস গার্ল’কে আর যার শ্লোগান ‘#আইওনাবিএস্পাইসগার্ল’। প্রচারণায় ভালো সাড়াও পাচ্ছিল কমিক রিলিফ।
তবে বিটেনের গণমাধ্যমে কমিক রিলিফ নিয়ে বেড়িয়ে আসে একটি অনুসন্ধান মূলক প্রতিবেদন। যেখানে বলা হয় ঐ টি-শার্ট তৈরী করা হয় বাংলাদেশের একটি কারখানা থেকে। যেখানে মূলত নারী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশী। প্রতিনিয়ত নানাবিধ বঞ্চনার সিকার হওয়ার তথ্যই বেড়িয়ে আসে সাইমন মারফির করা প্রতিবেদনটিতে। সেখানে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে নারী শ্রমিকদের উপর প্রতিনিয়তই চলে নানা মানসিক নিপীড়ন, ঘন্টায় তাদের বেতন মাত্র ৩৫ পেনি বা ৩৮ টাকা! যা আন্তর্জাতিক মজুরীর তুলনায় অনেক কম। বাংলাদেশের গাজিপুর থেকেই প্রতিবেধনটি লিখেছেন সাইমন মারফি। বলা হয়েছে, যে প্রতিষ্ঠান থেকে টি-শার্ট গুলি তৈরী হয়েছে তা বাংলাদেশের একজন মন্ত্রীর! তবে মালিকের নাম প্রকাশ করা হয়নি। লেখাটিতে গার্ডিয়ান মূলত একটি পরিহাসকেই তুলে ধরেছেন। ব্রিটেনে নারী পুরুষের সমতা আনয়নে তাদের কার্যত প্রচারণার একটি পরিহাস যা বাংলাদেশের শ্রমিকদের বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের সাথে করা হয়েছে।
উল্লেখ্য এই প্রচারণার বিষয়ে কথা বলেন সেদেশের একজন বিখ্যাত টিভি উপস্থাপিকা হলি উইলোঘবি, তিনি অভিযোগ করেন তাদের পেশায় এখনো কাঙ্ক্ষিত সমতা আসেনি। সেখানে নারী কর্মিদের মজুরিই যথেষ্ঠ নয়। এই প্রচারণার নারীদের মজুরির বিষয়টি বেশী উঠে এসেছে তবে তারা একবারও তাদের প্রচারণায় ব্যবহৃত টি-শার্ট শ্রমিকদের কথা বলেনি!
এ বিষয়ে গার্ডিয়ান এর সাথে স্পাইসগার্ল এবং কমিক রিলিফের কথা হয়েছে। স্পাইস গার্লস এর টি-শার্ট কমিক রিলিফের মাধ্যমে ফান্ড তৈরী করার ব্যাবস্থা করেছিল। তবে কমিক রিলিফ জানিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আনা বঞ্চনার অভিযোগ সম্পর্কে তারা অবগত না। তারা তাদের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘রিপ্রেজেন্ট’ এর কাছ থেকে সব তথ্য নিবে। তারা এও জানায় যদি কারখানায় নারী শ্রমিকদের নিপীড়নের তথ্য সঠিক হয় তবে তারা উপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে শ্রমিকদের বেতনের কথাও উঠে আসে। ৮২ পাউন্ড বা ৮,৮০০ টাকা বেতন এবং অতিরিক্ত ওভার টাইম। উঠে আসে সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষ এবং আন্দোলনের ঘটনাও। এই বিষয়ে লেবার বিহাইন্ড দ্যা লেবেল’র পরিচালক ডমিনিক মুলার গার্ডিয়ানকে বলেন ‘বাংলাদেশের কারখানাগুলোর কান্ডকারখানা বেআইনি কার্যকালাপের সাধারণ সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।‘ উল্লেখ্য সাম্প্রতি ঘটে যাওয়া শ্রমিক আন্দোলনের বিষয়ে যথেষ্ঠ সরব থাকতে দেখা গিয়েছে ব্রিটেনের গণমাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ানকে।