আজীবন সম্মাননা পেলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী

আজীবন সম্মাননা পেলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী

জীবন থেকে আটটি দশক পেরিয়ে গেলেও এখনও কলম-হাতে সমানতালে লিখে যাচ্ছেন বিখ্যাত কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের কলামে এই বয়সেও নিজস্ব চিন্তা নিয়ে নিত্যদিন হাজির হওয়া আবদুল গাফফার চৌধুরী এবার পেলেন আতাউস সামাদ স্বারক ট্রাস্ট ফান্ড আজীবন সম্মাননা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আয়োজনে ট্রাস্ট কর্তৃক ‘আজীবন সম্মাননা, স্মারক বক্তৃতা ও শিক্ষার্থী বৃত্তি প্রদান-২০১৯’ তাকে এই সম্মানে ভূষিত করা হয়।

শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত আবদুল গাফফার চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে না পারায় তার পক্ষ থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন দৈনিক কালের কণ্ঠের ফিচার সম্পাদক আলী হাবিব।

এক পর্যায়ে তাকে টেলিফোনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত করা হয়। টেলিফোন বার্তায় তিনি আতাউস সামাদ স্মারক ট্রাস্ট ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

অনুষ্ঠানের স্মারক বক্তা অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেন, “কলামিস্টদের যথেষ্ট পড়াশোনা এবং গবেষণার যোগ্যতা যেমন থাকতে হয়, তেমনি তাদের গভীর অন্তর্দৃষ্টি থাকতে হয়। বিষয়ের প্রতি গভীরতর তথ্য-উপাত্তের ব্যবহার এবং বিশ্লেশনের যথাযথ উপলদ্ধি একজন কলামিস্টের সফলতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান বলেন, “সমকালীন প্রেক্ষাপটে যা আমরা বলতে পারি না, তার লেখায় তা তিনি (আব্দুল গাফফার চৌধুরী) বলেন। আর তার কথার উচ্ছ্বাসে উচ্ছ্বসিত হয়ে তারপর অনেকে বলে।”

তিনি আরও বলেন, ‘৫২ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত তিনি এক ধরনে লিখতেন, আবার এর পরবর্তী সময়ে অন্য ধরনে লিখেছেন। ‘৫২ পরবর্তী সময়ে তিনি ধর্মান্ধতা-মৌলবাদ নিয়ে লিখেছেন, আর ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে তিনি রাজনৈতিক জটিল বিষয়াদি নিয়ে লিখেছেন।”

অনুষ্ঠানে মোট পাঁচজন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়। বৃত্তিপ্রাপ্তরা হলেন মো. নাজমুল হুসাইন, তারেক আল হাসান, মোস্তফা মু. তাহান, ইশরাতুল জাহান শোভা ও ইশতিয়াক আহমেদ।

প্রসঙ্গত, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান কলামিস্ট-সাংবাদিক। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানীয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কর্মজীবনে তিনি দৈনিক ইনসাফ, দৈনিক আজাদ, দৈনিক পূর্বদেশ, মাসিক মোহাম্মদীসহ বিভিন্ন পত্রিকায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন। মাটি-মানুষ, লোকায়ত সংস্কৃতিকে তুলে ধরার পাশাপাশি তিনি ধর্মান্ধতা, হিংস্র মৌলবাদ, সামরিক ও আধা-সামরিক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন বিভিন্ন সময়।