আবারও সংলাপ নিয়ে তামাশার রাজনীতি

আবারও সংলাপ নিয়ে তামাশার রাজনীতি

নির্বাচনের পরে আবার শুরু হয়েছে সংলাপ রঙ্গ। সংলাপের আহ্ববান আওয়ামীলীগের কাছ থেকে আসলেও এক এক সময় এক এক রকম কথা বলছেন আওয়ামীলীগের নেতারা। শুরুতে সংলাপকে ‘সংলাপ’ বলেই প্রচার আওয়ামীলীগ তবে বিএনপি পুনঃ নির্বাচনের দাবিতে সংলাপ চাইলে না অস্বীকার করে আওয়ামীলীগ। বিএনপির দাবি জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই নতুন নাটক শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল।

গত রবিবার ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী’ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কিছু মতবিনিময় করবেন এবং নেতাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে। এ ব্যাপারে আমরাও সবাই একমত। যাঁরা সংলাপ এসেছিলেন তাঁদের আবারও নেত্রী সংলাপে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। একসঙ্গে সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হবে। সেটা খুব শিগগির জানিয়ে দেওয়া হবে।’

আমন্ত্রণের বিষয়ে তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল গণভবনে আমন্ত্রিত। ঐক্যফ্রন্ট আছে, যুক্তফ্রন্ট আছে, ১৪ দল আছে, জাতীয় পার্টি আছে, অন্য যেসব দল আছে, সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। যাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সংলাপ করেছিলেন, তাদের চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে।আজ (মঙ্গলবার) বেলা সাড়ে ১১টায় ধানমন্ডি হোয়াইট হল কনভেনশন সেন্টারে ১৯ জানুয়ারি একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিজয় সমাবেশ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন,‘এখানে সংলাপের বিষয় এলো কোথা থেকে। আর নির্বাচন নিয়ে সংলাপ কেন করতে যাব। যেখানে সারা গণতান্ত্রিক বিশ্বের নেতারা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছেন, সেখানে সংলাপ কেন হবে। আমন্ত্রণ জানানো মানে তো সংলাপ না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংলাপ নিয়ে ধূম্রজালের কথা বলা হচ্ছে। সংলাপ নিয়ে তো আমরা কিছু বলিনি। এখন কেউ যদি মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করেন কি করার আছে? আমার সব বক্তব্যের অডিও, ভিডিও রেকর্ড রয়েছে। আমি কখনো বলিনি সংলাপ হবে। আমার বক্তব্যে সংলাপের কোনো বিষয় নেই।’

অন্যদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ‘সংলাপের’ বিষয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করছে সরকার। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম আজ মঙ্গলবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বলেছেন,’আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও একটি সংলাপ করবেন।’

এইচ টি ইমামের বক্তব্যের কিছু পরে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কের একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “গত শনিবার আওয়ামী লীগের যৌথসভায় তিনি সংলাপ শব্দটিই ‘উচ্চারণ’ করেননি।”

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচনে ‘প্রহসন’ ও ‘ভোট ডাকাতির’ জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে স্টেডিয়ামে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।”

সংলাপ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলের এজেন্ডা থাকলেই তাঁরা সংলাপে যাবেন। তা না হলে যাবেন না।’

তবে সংলাপ নিয়ে নির্বাচনের আগেও জাতির সাথে আওয়ামী লীগ তামাশা করেছে। এবং সব দাবি অগ্রাহ্য করে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে আবারও প্রকাশ্যে সকাল-বিকাল জাতির সামনে মিথ্যা বলে যাচ্ছে। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, সংলাপের নামে আবারও নতুন নাটক করতে যাচ্ছে দলটি। জনগনের সাথে এমন প্রহসনের জন্য ইতমধ্যে আওয়ামী লীগের বিশ্বাসযোগ্যতা শুণ্যের কোঠায় চলে এসেছে।

সাধারণ জনগণ এই ধরণের নোংরা মিথ্যাচারের অত্যাচারে অতিষ্ট। এই অত্যাচার থেকে মুক্তির পথ চেয়ে  বসে আছে জাতি।