সিইসি’র বক্তব্যে জাতি বিস্মিত

সিইসি’র বক্তব্যে জাতি বিস্মিত

নির্বাচনী সহিংসতায় ২২ জনের মৃত্যুসহ কারচুপি, ভোটদানে বাধা, জালভোট ও এজেন্টদের মারধর করার পরও সংবাদ সম্মেলনে সিইসির কণ্ঠে উচ্চারিত হল সুষ্ঠু নির্বাচনের সুসংবাদ! আজ সোমবার বিকালে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নির্বাচন নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে বিস্মিতই হয়েছে জাতি। সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের একক প্রচেষ্টায় জাতীয় নির্বাচনের মতো একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সহায়তায় এ কর্মযজ্ঞ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

এছাড়াও কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, রবিবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শতকরা ৮০ ভাগ ভোট পড়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।

সিইসি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে তিনটি কেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় ফলাফল চূড়ান্ত করা যায়নি। ২৯৮টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫৯টি, জাতীয় পার্টি ২০টি, বিএনপি ৫টি, গণফোরাম ২টি, বিকল্পধারা ২টি, জাসদ ২টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, তরিকত ফেডারেশন একটি, জাতীয় পার্টি-জেপি একটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তিনটি আসন পেয়েছেন।

‘নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছিল। এ নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে যাতে কোনো শঙ্কা না থাকে, প্রতিটি ভোটার যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য সারা দেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, প্রার্থীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্তসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি প্রতিরোধের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল।

অথচ বিশ্লেষকরা মনে করছেন এই নির্বাচন কমিশনই ইতিহাসের সবচেয়ে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের তফসিলের পর থেকে স্বাধীন এই প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে বেশি সরকার দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আসছিল। বিরোধীদের মনোনয়ন নিয়ে তালবাহানা ছাড়াও প্রচারণায় বিরোধীরা মাঠে নামলেই হামলার শিকার হওয়ার পরও কোন অভিযোগ আমলে নেয়নি তারা। অন্যদিকে নির্বাচনী নিয়ম লঙ্ঘনের পরেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের। অনেকেই মনে করছেন, ইসি দেশের জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।