মাঝে একদিন তারপরই ভোটগ্রহণ। অভিযোগে জর্জরিত সরকার ও নির্বাচন কমিশন। তারপরেও ভোটের মুখ দেখছে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মিডিয়া, সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের ব্যক্তিবর্গরা তাদের মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে শুরু করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজিরা’ তাদের এক প্রতিবেদনে নির্বাচনে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করার কথা উল্লেখ করেন।
প্রথমত, আল জাজিরা এই নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা। করেছে। তাদের মতে, এই নির্বাচন বিশ্বের অষ্টাদশতম জনবহুল দেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের ভাগ্য নির্মাণ করবে। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন যে আশা ভঙ্গ করেছিল। যেখানে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে। যার ফলে অর্ধেকেরও বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দীতা ছাড়াই শেখ হাসিনার সরকার ওয়াকওভার করে। এই প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে একরকম ‘স্বৈরাচারী’ শাসন জারি হয়। বিরোধীদের দমন করে গণতন্ত্র চর্চার পথ অবরুদ্ধ করা হয়। বাক-স্বাধীনতায় চরম আঘাত হানা হয়।
নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং সুষ্ঠুতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আল জাজিরা। তারা সংশয় প্রকাশ করছে যে , যেখানে বিএনপি ৩০০ আসনেই হামলার শিকার হয়েছে এবং গতমাস থেকে এখন পর্যন্ত তাদে ১১ হাজার ৫০০ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানে আদৌ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা? এছাড়াও ১০ কোটি ভোটার আদৌ ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবে কিনা, তা নিয়েও দ্বিধা রয়েছে।
শেখ হাসিনার সরকার যে উন্নয়নের রাজনীতি করেছেন সে বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনটিতে। এই উন্নয়নের আড়ালে তিনি বাংলাদেশে এক দলীয় সরকার ব্যবস্থা প্রচলনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা এবং আদালতের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে বিচ্ছিন্ন করা তারেই প্রমাণ বহন করে।
প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের মিডিয়ার ক্রাকডাউনের দিকেও নজর দেয়া হয়েছে। বর্তমানে গণমাধ্যম স্বাধীনতায় ১৮০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬। যা সত্যিই একটি তৃতীয় বিশ্বের দেশের জন্য বিপজ্জনক। রিপোর্টাস উইথআউট বর্ডার’র মতে, ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আইসিটি আইনে ২৫ জন সাংবাদিক এবং বহু ব্লগার ও ফেসবুক অ্যাকটিভিস্টকে গ্রেফতার করে সরকার। সেখানে শহিদুল আলমের কথাও উল্লেখ করা হয়।
এখন দেখার বিষয় আন্তর্জাতিক মিডিয়ার এই পর্যবেক্ষণ কতটুকু জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে নির্বাচনকে ত্বরান্বিত করে?