উত্তরপ্রদেশের পার্কগুলোতে নিষিদ্ধ হচ্ছে জুম্মার নামাজ

উত্তরপ্রদেশের পার্কগুলোতে নিষিদ্ধ হচ্ছে জুম্মার নামাজ

এবার ভারতের উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন পার্কে জুম্মার নামাজে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওই প্রদেশের প্রশাসন। উত্তরপ্রদেশের নয়ডার সেক্টর-৫৮ এলাকায় বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির অফিসের অনেক মুসলিম চাকুরীজীবী পার্কে একসাথে জুম্মার নামাজ আদায় করে। নামাজের একত্রিত হওয়াকে ‘শান্তির প্রতি হুমকি’ হিসেবে দেখছে সে প্রদেশের প্রশাসন। এই কারণেই কোম্পানিগুলোকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে যেন তাদের কোন মুসলিম কর্মচারী একত্রে পার্কে জুম্মা নামাজ আদায় না করে। গণমাধ্যম মারফত জানা গিয়েছে একটি হিন্দুত্ববাদ সংগঠনের অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

এদিকে গত এপ্রিলে জুম্মা নামাজ পণ্ড করা নিয়ে বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় অপ্রীতিকর অবস্থা সৃষ্টি করে কিছু মৌলবাদী হিন্দু সংগঠন। এই সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল- বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরঙ্গ দল, হিন্দু ক্রান্তি দল, গো-রক্ষক দল ও শিবসেনা। নামাজস্থলে ওইসব সংগঠনের নেতা কর্মীরা ‘জয় শ্রীরাম’, ‘রাধে রাধে’ বলে শ্লোগান দিতে থাকে এবং নামাজরত মুসলমানদের নামাজ পণ্ড করার চেষ্টা করে। ওয়াজিরাবাদ, আতুল কাটারিয়া চক, সাইবার পার্ক, বখতাওয়ার চক ও সাউথ সিটিত এলাকা সমুহে মূলত এমন কাজ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সেদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে তোলপাড় হলে মুখ খোলেন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা মনোহরলাল খট্টার। তবে তাকে উলটো হিন্দু সংগঠনগুলোর বাহবা গাইতেই শোনা যায়। এই ব্যাপারে তিনি বলেন, “নামাজ পড়া উচিত মসজিদ কিংবা ঈদগাহ’র মত ধর্মীয়স্থানে। যদি জায়গার অভাব হয় তবে নিজের বাড়িতে নামাজ পড়ুন।”

হরিয়ানার ওই ঘটনার পর এবার প্রশাসনিক ভাবেই মুসলমানদের ধর্মীয় আচার পালনে বাধা আসলো উত্তর প্রদেশে। উল্লেখ্য উত্তর প্রদেশের এই পুলিশ প্রশাসনই হিন্দুদের কাওয়ার যাত্রায় সমর্থন ও শ্রদ্ধা জানিয়ে হেলিকপ্টার থেকে ফুল বর্ষণ করে। কাওয়ারিয়া হিন্দু সম্প্রদায়ের বা শীবভক্তদের একটি বার্ষিক শোভাযাত্রা যা ওই অঞ্চলের হিন্দুদের মাঝে খুবই জনপ্রিয়।  এই বিষয়ে ওই প্রদেশের মুসলিম নেতা ও সাংসদ, মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন এর প্রধান ব্যারিস্টার আসাদুদ্দিন ওয়াইসি প্রশ্ন তুলে বলেন “শিবভক্ত কাওয়ারিয়াদের উপরে পুষ্পবর্ষণকারী পুলিশের নামাজে এত সমস্যা কেন।” এদিকে পুলিশ তাদের নোটিশে জানিয়েছে পার্কে জুম্মা নামাজ আদায়ের ফলে ‘শান্তি ও সম্প্রীতি’ নষ্ট হতে পারে। প্রশাসন কোম্পানিগুলোকে এও বলে হুঁশিয়ার করেছে যে যদি তাদের মুসলিম কর্মচারীরা ঐ খোলা স্থানে নামাজ আদায় বন্ধ না করে তবে কোম্পানিগুলোর উপর আদেশ অমান্যের ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। এই নিয়ে ব্যারিস্টকার আসাদুদ্দিন আরো বলেন, “কোন কর্মচারী তার ব্যাক্তিগত জীবনে কি করবে তার উপর কোম্পানির কত্রিত্ব কতটা আইনি?” এই নিয়ে সে প্রদেশের মুসলিম সংগঠন গুলো আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।