সেনাতেই স্বস্তি?

সেনাতেই স্বস্তি?

আজ থেকে সারা দেশে নির্বাচনকালীন সহিংসতা রোধে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনী। এছাড়াও আগে থেকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। মোট ৩৮৯ উপজেলায় সেনা ও ১৮টি উপকূলীয় উপজেলায় নৌবাহিনী দায়িত্বে থাকবে বলে জানা গিয়েছে। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার এবং পরিবহন বিমান প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য কাজে লাগানো হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার অধীনেই এবং সমন্বয়য়ের মাধ্যমে তাদের অভিযানিক কার্যক্রম সম্পাদন হবে বলেই ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর) থেকে জানানো হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী সহিংসতার আভাস পাচ্ছিলো সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট অনেকেই বিশেষত বিরোধী শক্তি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি। শুরু থেকেই তাদের দাবি ছিলো নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের। যদিও সেনা মোতায়েন নিয়ে শুরুতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কিছুটা অনিহা লক্ষ্য করা যায় তবুও অনেকটা বাধ্য হয়েই সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত আসে। এরপর গতকাল নাটোরে প্রথম সেনাবাহিনী নামে এবং আজকে (২৪শে ডিসেম্বর) সারা দেশেই সেনাবাহিনীকে টহলরত অবস্থায় দেখা যায়। সহিংসতার ভয় এবং বিরোধী শক্তির কোন রকম বাধাহীনভাবে নির্বাচনের প্রচারণার কাজ চালানোর প্রত্যাশা থেকেই বহুল কাঙ্ক্ষিত ছিলো সেনা মোতায়েন। তার ফল দেখা গিয়েছে আজকে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী জোট সবাইকেই দেখা গিয়েছে সেনাবাহিনীকে সংবর্ধনা দিতে। এদিকে বিরোধী শক্তির এমন উৎফুল্ল অবস্থায় দেখে যদিও আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের সেনা মোতায়েন নিয়ে বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন “এত উচ্ছ্বাসিত হওয়ার কিছু নেই।” তবুও অনেক স্থানে হাততালি দিয়ে সেনাবাহিনীকে স্বাগতম জানাতে দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষের।

এদিকে আজকে সন্ধ্যায় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বিএনপি নেতা আহমেদ আজম খান বলেছেন “সেনাবাহিনী নামলে সমগ্র জাতি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিলো যে এইবার বুঝি মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে তফসিল ঘোষণার পর থেকে গত দুই সপ্তাহে আজকেই আমাদের উপর হামলা সবচেয়ে বেশি হয়েছে।” যদিও তার এই কথার বিরুদ্ধে নানান যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন আওয়ামীলীগ নেতা লেনিন।

অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি তফসিল ঘোষণার পর থেকে যে সহিংসতা এবং কমিশনের একপেশে আচরণ দেখা যাচ্ছিলো, সেনাবাহিনী মাঠে নামাতে সেটা কিছুটা কমতে পারে। যদিও অনেকেই আবার ভিন্নমতও দিয়েছেন, তাদের মতে পুলিশের আচরণের চেয়ে সেনাবাহিনীর আচরণ খুব বেশি উন্নত হবে না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বলছে দুই একদিন গেলেই সেনাবাহিনী মাঠে থাকা ফল পাওয়া যাবে যদিও সেটা ভালো না খারাপ তার কোন ইঙ্গিত দেয়নি তারা। তবে এটা বলাই চলে যে সেনাবাহিনী নামাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে।