আজ সোমবার ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি ইরানের একটি সামরিক প্রযুক্তি বিষয়ক প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইরানের বর্তমান অবস্থার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা সাধারণ ইরানিদের জন্য স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।
তিনি বলেন “আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের জনগণ স্বনির্ভর হতে শিখেছে।” তবে এবারের নিষেধাজ্ঞা অন্যান্য নিষেধাজ্ঞাগুলো থেকে মেয়াদ কম হবে। মার্কিন সরকার ইরানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্রবেশের বাধা দিয়ে জনগণকে অসন্তোষ করার চেষ্টা করে এসেছে। উল্লেখ্য, এই নিষেধাজ্ঞায় ইরানের ব্যাংক এবং জ্বালানি তেলের বাজার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের জনগণ নিজেদের পণ্য এবং সেবা খাতে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে বলেই অভিমত দেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি। তিনি বলেন “ইরানের জনগণ ও সরকার পরস্পরকে সহযোগিতার মাধ্যমে শত্রুর ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিচ্ছে।”
এবছর মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প একতরফাভাবে ইরানকে পরমাণু চুক্তি থেকে বের করে দেয়। চুক্তিটি জাতিসংঘ, চীন, রাশিয়াসহ ইউরোপীয় দেশগুলোকে সাথে নিয়েই করা হয়েছিলো। এই পরমাণু চুক্তি ভঙ্গের পরপরেই ইরানের উপর আবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্প প্রশাসন জানায় ইরান ঠিক মত পরমাণু চুক্তি না মানায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা। যদিও এব্যাপারে জাতিসংঘের পরিদর্শক দলের মতামত ছিল ভিন্ন। তাদের প্রতিবেদনে জানা যায় খুব সুশৃঙ্খল ভাবেই পরমাণু চুক্তি মেনে আসছিল ইরান।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা নিয়ন্ত্রণের জন্য ইরান সরকারের সাথে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে আমেরিকা। আলোচনার জন্য নানাবিধ শর্তও জুড়ে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ইরান সাফ জানিয়ে দিয়েছে তাদের কোন শর্তই মানা হবে না। এদিকে এ বছর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ সভা চলাকালীন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও রাশিয়ার সাথে বৈঠক করে ইরান। বৈঠকে আমেরিকার মুদ্রা ‘ডলার’কে পাশ কাটিয়ে নিষেধাজ্ঞা এড়ানো এবং অন্যান্য মুদ্রার মাধ্যমে জ্বালানি তেল রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেয় তারা। এতে ইরানের সাথে আরো উত্তপ্ত হয় আমেরিকার সম্পর্ক।