বাংলাদেশের নির্বাচন এবং গণতন্ত্র নিয়ে এবার সরাসরি কথা বলল ব্রিটেন সরকারের একজন মুখপাত্র। যুক্তরাজ্যের সেইন্ট এলবানসের সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ বিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারপার্সন এবং কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অ্যান মেইন বিট্রেনের টাইমস পত্রিকায় উপসম্পাদকিয় কলামে এই ব্যাপারে লিখেছেন। কলামটি ১৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়।
অ্যান মেইন তার লেখায় বাংলাদেশের নানা ইস্যু নিয়েই কথা বলেছেন। তবে তার লেখার মধ্যে সব জায়গায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের গণতন্ত্ররোধ করার অপচেষ্টার প্রচেষ্টা। লেখাটিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার রাখে আর সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই পাশে থাকবে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের দূর্নীতি নিয়ে তিনি বলেন, এদেশে দূর্নীতি সবচেয়ে বড় সমস্যা আর এই কারণেই সুস্থ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পিছিয়ে পড়ছে দেশটি। বিরোধীদলগুলোর হামলা মামলায়ও যে তারা কতটা উদ্বিগ্ন সেটাও এই লেখাই প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মোটামুটি ক্ষোভই প্রকাশ করেছেন মেইন। শহিদুল আলমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন “এই আইন বাংলাদেশের মুক্ত সমাজের জন্য কতটা বিপদ দাড় করিয়ে দিয়েছে এ ঘটনা (শহিদুল আলমের গ্রেফতার) তার প্রমাণ।” তিনি মনে করেন নির্বাচনের ঠিক আগে আগে কোন সমালোচনাকে অপরাধস্বরূপ ব্যাখ্যা করা সে দেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি সরূপ। এই আইনের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড এবং জাতিসংঘের সাহসী অবস্থানের কথা জানিয়েছেন তিনি।
তিনি একপর্যায়ে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে বাংলাদেশে ইংল্যান্ডের আর্থিক সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন “ডিএফআইডিএ স্ট্রেন্থেনিং পলিটিকাল পার্টিসিপেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রে সহানুভূতিশীলতার উন্নয়নে ইংল্যান্ড বাংলাদেশে ২০১৮ সাল থেকে ১৬ মিলিয়ন অনুদান প্রদান করে। আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে আমাদের করদাতাদের অর্থ সঠিক পথে ব্যয় হচ্ছে।”
বর্তমানের নির্বাচন পরিস্থিতি কোনভাবেই কাম্য নয় সেটা স্পষ্ট করেই বলেছেন তিনি। এছাড়া আগামীর নির্বাচনে বাংলাদেশিদের যে একটি বড় সুযোগ আছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সেই কথাও বলেছেন তিনি। তার কথায় উঠে আসে পর্যবেক্ষক সংশ্লিষ্ট কথাও। পুরো বিশ্বের নজরই এখন বাংলাদেশের নির্বাচনে আছে সেটাই মূলত বলেছেন তিনি।
এদিকে অ্যান মেইনের লেখার সুত্র ধরেই বর্তমানের বাংলাদেশের রাজনীতির পরিস্থিতির অবস্থা যাচাই করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ। তাদের সকলের মতেই, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে সুস্থ, অহিংস, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হওয়াটা যে শুধু জনগণেরই দাবি না এই দাবি এখন আন্তর্জাতিক সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।