‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলা

‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলা

‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন করতে এসে ছাত্রলীগের হাতে  মারধরের শিকার হয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী— এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হামলাকারীরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের পদধারী নেতা। মারধরের শিকার ছাত্রদের মাঝে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় কয়েকজন নেতাও ছিলেন।

গতকাল রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে তাদের কর্মসূচি পালনের কথা ছিলো।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা বিন ইয়ামিন, জসিম উদ্দিন আকাশ, সোহরাব হোসেনসহ আরও বেশকয়েকজন দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) খেতে বসলে তাদের উপর ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী অতর্কিতভাবে হামলা করে।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, মারধরকারী ছাত্রলীগের সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের নেতা-কর্মী। তবে তাদের কোনও স্পষ্ট পরিচয় তারা দিতে পারেননি। তারা বলেন, আমরা আট-দশ জন টিএসসি প্রাঙ্গণে আড্ডা শেষে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়াতে খাবার নিয়ে খেতে বসি। তখন আমাদের উপর ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের পদধারী নেতাসহ কর্মীরা নৃশংসভাবে হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হয় সোহরাব হোসেন, কবীর হোসেন, জসিম উদ্দিন।

এদের মধ্যে সোহরাব হাসানের অবস্থা গুরুতর। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মোল্লা বিন ইয়ামিন ফেইসবুকে লেখেন, “আজ (রবিবার) ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ ‘নিরাপদ ভোট চাই’ বিষয়ে রাজুতে আমরা কোটা আন্দোলনের কয়েকজন নেতা একটি সচেতনতা মূলক কর্মসূচি করতে যাই। দুপুর ২.৩০ এর দিকে ছাত্রলীগের সেই চিহ্নিত নেতার যারা কোটা আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এ হামলা চালিয়েছিলো  তারাই অতর্কিত হামলা করে জসীম উদ্দিন আকাশ, সোহরাব হোসেন,  জালাল আহমেদ, আহমেদ কবির গুরুতর আহত হয়েছে। তারা এখন হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে আছে। এই বাংলাদেশ  আজ আহত। হামলা করে মামলা দিয়ে গুম করে খুন করে এই প্রতিবাদ বন্ধ করা যাবে না।
এই দেশকে নিরাপদ করতে এই দেশকে জনগণের বসবাস যোগ্য করতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবেই লড়বো। জাগো বাঙালি জাগো আর ঘুমিয়ে থাকার সময় নাই।”

ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।

হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, দলকানা প্রশাসনের সাথে মিলিত হয়ে ছাত্রলীগ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে এ নিয়ে কোন কর্মসূচি দেয়া যায় কিনা আমরা সেটা ভেবে দেখব।