প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার পরেই কমিশনের যে ব্যক্তির নানা আলোচনা সমালোচনায় উঠে আসেন, তিনি আরেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। প্রথম থেকেই তিনি নির্বাচনের পরিবেশ স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করার জন্য খুব জোরালভাবেই সচেষ্ট ছিলেন। এবং একরকম একাই লড়াই করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি জানান “বাংলাদেশে নূন্যতম লেবেল প্লেয়েইং ফিল্ড নেই!” সেখান থেকেই আবারো তোড়জোড় শুরু হয় তাকে নিয়ে, বিশেষ করে সরকারি এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী মহলে। এর জের ধরেই গতকাল রাঙ্গামাটিতে সাংবাদিকদের কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা মাহবুব তালুকদারের সকল তথ্য মিথ্যা ও বানোয়াট বলে প্রচার করেন। উল্লেখ্য, মাহবুব তালুকদার শুরু থেকেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে মরিয়া ছিলেন। অন্যদিকে অন্যান্য কমিশনাররা নির্বাচনকে একপেশে এবং অগ্রহণযোগ্য করার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন এবং এখনো যাচ্ছেন। আর একজন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম তো এর আগে বলেই দিয়েছিলেন “পুরোপুরি সুস্থ নির্বাচন কোথাও হয় না এবারও হবে না।“ শুরু থেকেই কমিশনে মাহবুব তালুকদারের অবস্থান ছিলো পুরোপুরি সংখ্যালঘু। অন্যান্য কমিশনারদের সাথে তার মত ঠিক মিলছিলো না।

গতকাল সাংবাদিকদের সামনে প্রধান কমিশনার নুরুল হুদা তাকে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করতে চাইলে তিনি ক্ষোভপ্রকাশ করেন এবং নিজের অফিসে বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জবাব তিনি “আমার বক্তব্য” নামের একটি খোলা চিঠির মাধ্যমে দেন। সেখানে তিনি বলেন “নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই বলে আমি মিথ্যা কথা বলেছি। আমি তার এই বক্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কারণ এ কথা বলে তিনি একজন নির্বাচন কমিশনারের অস্তিত্বে আঘাত করেছেন”। তিনি আরো বলেছেন বাংলাদেশে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি নেই তা বিচার সাংবাদিকদের বিবেকের মাধ্যমেই করতে বলেছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বিরূপ মন্তব্যের প্রতিবাদ না করে থাকাটা তার জন্য কষ্টসাধ্য ছিলো বলেই জানিয়েছেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেই বলেন এর আগেও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের জন্য তিনি কাজে বাধা পেয়ে আসছিলেন। তবে তিনি শান্তি বজায় রাখার স্বার্থে কোন প্রতিবাদ জানাননি।
এদিকে কথাসাহিত্যিক এবং কবি মাহবুব তালুকদারের নামে এমন কটুক্তি করায় অনেকেই ধিক্কার জানাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে। মাহবুব তালুকদারের আজকের সাংবাদিক সম্মেলনের পর নুরুল হুদা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এখনো কিছু বলেননি।