“আচ্ছে দিন আনেওয়ালে হ্যায়!” “সব কা সাথ, সব কা বিকাশ!” “না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা!” ভাইব্রান্ট গুজরাত! গুজরাত মডেল! ২০১৪ লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে নরেন্দ্র মোদির মুখে এমনতর বহুবিধ বচন যে অধিকাংশ ভারতীয় জনতা বিশ্বাস করেনি, তা বলতে পারবেন না অতি বড় বিজেপি-নিন্দুকও। বরং, আসমুদ্রহিমাচল ভারতীয় জনগণ বিশ্বাস করেছিল, ‘পরিবারতান্ত্রিক’ কংগ্রেস দলকে হঠিয়ে সুদিন আনতে পারবে স্বঘোষিত ৫৬ ইঞ্চ ছাতির এই চৌকিদার! ২০১৪ লোকসভা ভোটের আগে জনসভায় নরেন্দ্র মোদি বলতেন, “আমাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন না। আমাকে বানান দেশের চৌকিদার! আমি দেশকে পাহারা দেব!” বলতেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হলেই সুইস ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সমস্ত ‘কালাধন’ দেশে ফিরিয়ে আনব এবং সেই ‘কালাধন’ বাটোয়ারা করে প্রতিটি গরিব মানুষের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেব! তার জনসভায় উচ্ছ্বসিত জনতার করতালিতে কম্পিত হয়েছে আকাশবাতাস। মোদি-জাদুতে প্রতিটি সভায় হয়েছে জনজোয়ার। চুলচেরা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মোদি-ঝড়ে উড়ে যাবে সব শক্তি, কেউ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। ২০১৪ সালের ১৬ মে ১৬তম লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হতে সত্য প্রমাণিত হয় বিশ্লেষণ। পরিষ্কার হয়ে যায়, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন এক ‘ব্যতিক্রমী’ রাজনীতিবিদ। গুজরাত-দাঙ্গা, বাবরি মসজিদ ধ্বংসে যার নাম জড়িয়ে আছে, সেই নরেন্দ্র মোদি জনতার রায়ে ১৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাজনৈতিক ক্ষমতার উচ্চাসনে আরোহন করলেন ২৬ মে তারিখে। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য আভাস দিয়ে রেখেছিল, বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হবেন নরেন্দ্র মোদি। বস্তুত, তৎকালীন বিরোধী শিবিরের প্রধান মুখ ছিলেন তিনিই। প্রচার করা হয়েছে, গুজরাতে তার মুখ্যমন্ত্রিত্বে উন্নয়নের বন্যা বয়ে গিয়েছে! নির্বাচনী প্রচারেও তিনি আদা-জল খেয়ে, জান লড়িয়ে চষে বেড়িয়েছেন ভারতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। তার প্রাণশক্তি ঈর্ষণীয়, স্বীকার করতেই হয়। আরও কিছু ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদি অদ্বিতীয়। উত্তেজক ভাষণ দ্বারা মানুষকে তাঁতিয়ে তুলতে, নিজের ঢাক নিজে পেটাতে, বুক চাপড়ে অন্যের কৃতিত্ব নিজে নিতে, জাতীয়তাবাদের ধুয়ো তুলতে, বারফাট্টাই করতে মোদির সমকক্ষ এই মুহূর্তে ভূ-ভারতে কেউ নেই! কিন্তু, ভাওতা দিয়ে জনতাকে দীর্ঘদিন আওতায় রাখা যায় না! চমক স্বল্পমেয়াদী, দীর্ঘদিন কার্যকর হয় না। ২০১৯ লোকসভা ভোট কড়া নাড়ছে, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সাড়ে চার বছর অতিক্রম করার পর, নরেন্দ্র মোদি এই সারসত্য নিশ্চয় হাড়ে-হাড়ে টের পাচ্ছেন!
২০০২ সালে গুজরাতের গোধরায় হিন্দু-মুসলমানের ভয়ংকর রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার নেপথ্যে ছিল যে-মানুষটি, সে কীভাবে দেশে ‘আচ্ছে দিন’ আনতে পারে? তখন মানুষ গভীরে গিয়ে চিন্তা করেননি, পরবর্তী সাড়ে চার বছরে তার খেসারত দিতে হয়েছে। মহম্মদ আখলাক, আফরাজুল হত্যার ঘটনা তো প্রচারের আলোয় এসেছে, আরও কত সংখ্যালঘু, অহিন্দু, দলিত মানুষকে নিগ্রহ এবং খুন করা হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই।
ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রয়াত নেতা অশোক ঘোষ বলতেন- ঝড় অস্থায়ী, বহমান বাতাস দীর্ঘস্থায়ী। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই, অল্পক্ষণের অস্থায়ী ধুলোঝড় সব লন্ডভন্ড করে দিতে পারে। এই আপ্তবাক্য রাজনীতি ক্ষেত্রে সবিশেষ প্রযোজ্য। ২০১৪ লোকসভা ভোটের আগে অধিকাংশ ভারতীয় সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল, রেডিও চ্যানেল অতি তৎপরতার সঙ্গে জনতাকে এই খবর ‘খাওয়াতে’ উদ্যোগী হয়েছিল, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হলে ‘আচ্ছে দিন’ আলবাত আসবে। প্রায় সব ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের স্বভাবদোষ, তিলকে তাল করা, বাড়িয়ে-চড়িয়ে বলা! এবং কোন আশ্চর্য দৈববলে কী জানি বাপু, অধিকাংশ জনতা সেই খবর দিব্যি ‘খেয়ে নেয়’, যুক্তি-তর্কের তোয়াক্কা না-করেই। নইলে, মানুষ কীভাবে বেমালুম ভুলে যায়, ২০০২ সালে গুজরাতের গোধরায় হিন্দু-মুসলমানের ভয়ংকর রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার নেপথ্যে ছিল যে-মানুষটি, সে কীভাবে দেশে ‘আচ্ছে দিন’ আনতে পারে? তখন মানুষ গভীরে গিয়ে চিন্তা করেননি, পরবর্তী সাড়ে চার বছরে তার খেসারত দিতে হয়েছে। মহম্মদ আখলাক, আফরাজুল হত্যার ঘটনা তো প্রচারের আলোয় এসেছে, আরও কত সংখ্যালঘু, অহিন্দু, দলিত মানুষকে নিগ্রহ এবং খুন করা হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। ১৯৮৯ লোকসভা নির্বাচন থেকে রাম মন্দির আন্দোলনকে পুঁজি করে ভারতীয় রাজনীতি-ভূমিতে দীর্ঘ সময় ধরে ক্রমশ জমি তৈরি করেছে বিজেপি। কট্টর সাম্প্রদায়িক শক্তি জনতার রায়ে ক্ষমতার শীর্ষাসনে অধিষ্ঠিত হলে সেই দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়বে, খুব স্বাভাবিক! এই প্রসঙ্গে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর উক্তি প্রণিধানযোগ্য, “ধর্মকে সম্পূর্ণরূপে রাজনীতি থেকে বাদ দেওয়া উচিত৷ ধর্ম ব্যক্তি-বিশেষের বিষয় হওয়া উচিত৷ ব্যক্তি হিসাবে মানুষ স্বেচ্ছায় যে-ধর্ম পছন্দ করে তা অনুসরণ করার পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে৷ কিন্তু, ধর্মীয় বা অতীন্দ্রিয় বিষয়ের দ্বারা রাজনীতি পরিচালিত হওয়া উচিত নয়৷ তা পরিচালিত হওয়া উচিত শুধুমাত্র অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক বিচারবুদ্ধি দিয়ে৷” ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও নেতাজি সোচ্চার, “…হিন্দু ও মুসলমানের স্বার্থ পৃথক— এর চেয়ে মিথ্যা বাক্য আর কিছু হতে পারে না। বন্যা, দুর্ভিক্ষ, মড়ক ইত্যাদি বিপর্যয় কাউকে রেহাই দেয় না। …হিন্দুরা ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে ‘হিন্দু রাজ’-এর ধ্বনি শোনা যায়, এগুলো সর্বৈব অলস চিন্তা।” আমরা ভুলে গিয়েছিলাম ধ্রুবসত্য। নেপথ্যে ছিল মোদী-ঝড়, মোদি-ম্যাজিক! কিন্তু, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে?
২০১৪ লোকসভা ভোটে বিরোধী শিবিরের প্রধান মুখ ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ২০১৯ লোকসভা ভোটে বিরোধী শিবিরের প্রধান মুখ কে? রাহুল গাঁধী? কে চন্দ্রশেখর রাও? নাকি মমতা ব্যানার্জি? আপাতত বহু রাজনীতি বিশেষজ্ঞ ধরে নিচ্ছেন, রাহুল গাঁধী। রাজনীতিবিদ হিসাবে রাহুল গাঁধী দারুণ তুখোড়? বিলকুল না। ‘মাত্র’ ৪৮ বছর বয়স তার। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে পেশ করা হলে, এই বয়সটা সত্যিই ‘মাত্র’! সকলের জানা ছিল, সোনিয়া গাঁধী তার পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতির কুর্সি ছেলের জন্যই বরাদ্দ রেখেছেন। ১৪ মার্চ ১৯৯৮ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত কংগ্রেস সুপ্রিমো ছিলেন তিনি। অভিজ্ঞতা অগাধ। রাজনীতিক হিসাবেও তিনি কুশলী, সমঝদার, আবেগহীন। ক্ষমতার হাতছানি উপেক্ষা করতে, আত্মত্যাগ করতে জানেন। সভাপতি থাকাকালীন তার রণকৌশলে, নেতৃত্বে ২০০৪ এবং ২০০৯ লোকসভা ভোটে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। ২০০৪ সালে সকলে ধরে নিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনিই। সকলকে চমকে দিয়ে তিনি মনমোহন সিংহকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করলেন। সোনিয়ার আত্মত্যাগ, ক্ষমতার হাতছানি উপেক্ষা করার গুণ শিক্ষণীয় রাহুলের। হয়তো ক্ষমতার লোভে ‘ভুল করে’ রাহুল এক-আধবার বলে ফেলেছেন, মোদির গদিটা তিনিই নেবেন! সেটা নিয়ে কটাক্ষ করার সুযোগ হাতছাড়া করেননি মোদি, “এত তাড়া কীসের? এই আসনে তো আমাকে ভারতের জনগণ বসিয়েছে!” ধৈর্য ধরুন রাহুল। দক্ষ রাজনীতিক হওয়ার ক্ষেত্রে স্থিতধী, কৌশলী, সমঝদার, নিরাবেগ হওয়া আবশ্যক। সক্রিয় রাজনীতি-অঙ্গনে রাহুল প্রবেশ করেছেন বছরখানেক। ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে তিনি বর্তমান সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতি। ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটে জয়ী হল কংগ্রেস। কাকতালীয়ভাবে, সভাপতি হিসাবে বর্ষপূর্তির দিনকয়েক আগে কোণঠাসা কংগ্রেস জয়ের মুখ দেখল; সমর্থকগণ বলছে, “লক্ষণ ভালো!” বেশ। অধিকাংশ বিজেপি-বিরোধী শিবির বলছে, রাহুল গাঁধী একার জোরে পর্যুদস্ত করেছে বিজেপিকে; ভারত পেয়ে গিয়েছে নতুন নায়ক! এটা বাড়াবাড়ি রকমের বাড়াবাড়ি! যুক্তি-বুদ্ধি প্রয়োগ করে, বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলুন। আবেগের তোড়ে হাওয়ায় ভাসবেন না, নইলে ভেসে যাবেন! আমাদের মতো দুঁদে সাংবাদিক যখন ‘উল্টো সুরে’ কথা বলবে, নেপথ্যে যুক্তি নিশ্চয় থাকবে! বিশ্লেষণ করতেই হয়।
অধিকাংশ বিজেপি-বিরোধী শিবির বলছে, রাহুল গাঁধী একার জোরে পর্যুদস্ত করেছে বিজেপিকে; ভারত পেয়ে গিয়েছে নতুন নায়ক! এটা বাড়াবাড়ি রকমের বাড়াবাড়ি! যুক্তি-বুদ্ধি প্রয়োগ করে, বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলুন। আবেগের তোড়ে হাওয়ায় ভাসবেন না, নইলে ভেসে যাবেন! আমাদের মতো দুঁদে সাংবাদিক যখন ‘উল্টো সুরে’ কথা বলবে, নেপথ্যে যুক্তি নিশ্চয় থাকবে! বিশ্লেষণ করতেই হয়।
লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে হিন্দি-বলয়ের তিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীশগঢ় এবং রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন হয়। লোকসভা ভোটের হাওয়া আন্দাজ করা যায়, তাই ‘সেমি ফাইনাল’ হিসাবে গণ্য এই তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। ২০১৪ সালে রায়পুরে নিজ বাসভবনে একান্ত আলাপচারিতায় ছত্তীশগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ বলেছিলেন, “রাজ্যে টানা দশ বছর ক্ষমতায় আছি, মানুষের অসন্তোষ স্বাভাবিক। কিন্তু, সমগ্র ভারত এখন মোদিকে চাইছে। তাই আমিও জিতব মোদি-ঝড়ে!” কথাটা মিলে গিয়েছিল। ৯০ আসনের বিধানসভায় বিজেপি পেয়েছিল ৪৯ এবং কংগ্রেস ৩৯ আসন। ২০১৮ বিধানসভায় আক্ষরিক অর্থে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। এবার কংগ্রেস ৬৮, বিজেপি ১৬, অন্যান্য ৬। টানা ১৫ বছর বিজেপি-শাসনের ইতি। ২৩০ আসনের বিধানসভা মধ্যপ্রদেশে। একমাত্র এই রাজ্যে বিজেপি-কংগ্রেস হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। ম্যাজিক ফিগার ১১৬ ছুঁতে পারেনি কংগ্রেস, প্রাপ্ত আসন ১১৪। বিজেপি ১০৯, অন্যান্য ৭। বিজেপি নেতা শিবরাজ সিংহ চৌহানের ১৪ বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বে ইতি। ১৯৯ আসনের বিধানসভা রাজস্থানে ৯৯ আসন পেয়েছে কংগ্রেস, বিজেপি ৭৩, বিএসপি ৬, অন্যান্য ২১। এখানে বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বিএসপি) নেত্রী মায়াবতী প্রার্থী দিয়ে কংগ্রেসের যাত্রাভঙ্গ করতে চেষ্টা করেছিল। ডাহা ফেল! ফলাফল জানার পর হাওয়া বুঝে, সুবিধা বুঝে ভিড়তে চেয়েছিল কোনও একটা শিবিরে। বাধ্য হয়ে সমর্থন করতে হল কংগ্রেসকে। কিন্তু, বাকি দুই রাজ্য তেলঙ্গানা এবং মিজোরামে সুবিধা করতে পারেনি কংগ্রেস। ১১৯ আসনের বিধানসভায় ক্ষমতা ধরে রেখেছে তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস) নেতা কে চন্দ্রশেখর রাও। ১১৯ আসনের বিধানসভায় টিআরএস প্রাপ্ত আসন ৮৮, কংগ্রেস ১৯, অন্যান্য ১২। ৪০ আসনের মিজোরামে ২৬ আসন দখল করে ক্ষমতায় এসেছে মিজোরামে ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ) নেতা জোরামথাঙ্গা। একমাত্র ছত্তীশগঢ় ব্যতীত কোনও রাজ্যে একক ক্ষমতায় ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারেনি কংগ্রেস। তিন রাজ্যে শতাংশ হিসাবে দুই শিবিরের ভোটের তারতম্য স্বস্তিকর নয়। ছত্তীশগঢ়ে কংগ্রেস ৪৩.২, বিজেপি ৩২.৮। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ৪১.১, বিজেপি ৪১। রাজস্থানে কংগ্রেস ৩৯.৩, বিজেপি ৩৮.৮। অন্য দু’টি রাজ্যে কংগ্রেস কতটা শক্তিশালী, হিসাব করুন। তেলঙ্গানায় টিআরএস ৪৬.৯, কংগ্রেস ২৮.৩। মিজোরামে এমএনএফ ৩৭.৬, কংগ্রেস ৩০.২।
এম করুণানিধি-পুত্র ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন ১৬ ডিসেম্বর এক প্রকাশ্য সভায় বলেন, “ফাসিস্ত মোদি সরকারকে পরাজিত করার ক্ষমতা রয়েছে রাহুল গাঁধীর। আসুন, আমরা দেশকে বাঁচাতে রাহুলের হাত শক্ত করি।” তিনি প্রকাশ্য সভামঞ্চ থেকে বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাহুল গাঁধীর নাম প্রস্তাব করেন। তবে, রাহুল যেন মনে রাখেন, সব শক্তিশালী আঞ্চলিক দলের নেতানেতৃগণ, যাদের নিয়ে বিরোধী জোট তৈরি করতে চান, সকলে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেনে নিতে রাজি নয়। তাই, কৌশলী পদক্ষেপ নিয়ে, সকলের সঙ্গে মানিয়ে-গুছিয়ে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে বিরোধী শিবির তৈরি করতে হবে। যুদ্ধ করতে হলে একজনকে সেনাপতি করতে হয়, রাহুলকে সব নেতা সেনাপতি হিসাবে মেনে নিতে রাজি। তিনি বিরোধী শিবির যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তৈরি করুন। কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা ভাবা যাবে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর। রাহুল গাঁধী-সহ সকল বিরোধী নেতানেতৃ যেন মনে রাখে, ইউনিটি ইজ স্ট্রেঙ্গথ! বিরোধী শিবির যেন ভুলে না যায়, “ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড, ডিভাইডেড উই ফল!” ভুলে গেলেই মোদিকে গদিচ্যুত করার সংকল্প ঝুলে যাবে!