ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে নানাবিধ অনুষ্ঠান। দিবসটি উদযাপনের অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় হল মিলনায়তনে প্রভোস্ট অ্যাওয়ার্ড, বার্ষিক অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিজয় একাত্তর হলের হাউস টিউটর এবং অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশীপ বিভাগের শিক্ষক রাশেদুল হক এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ. জে. এম. শফিউল আলম ভূইয়ার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান। আলোচক হিসেবে ছিলেন শহীদ ডা. আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী।
স্বাগত বক্তব্যে বিজয় একাত্তর হলের সিনিয়র হাউজ টিউটর ড. খাদেমুল হক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যাধুনিক হলগুলোর একটি বিজয় একাত্তর হল। অন্যান্য হলগুলো থেকে এই হল আলাদা। শুধুমাত্র পড়াশোনা নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও এখানে ছাত্ররা সুবিধাদি পেয়ে থাকে। আইটি সেন্টার, কাউন্সেলিং প্রভৃতিতে ছাত্ররা সুবিধা পেয়ে থাকে ছাত্ররা। অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স ছাড়াও ক্রীড়া প্রতিযোগীতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজয় একাত্তর হল কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের পুরস্কৃত করে থাকে।
প্রসঙ্গত, এই বছর প্রভোস্ট অ্যাওয়ার্ড-এর প্রদান করা হয় মোট ১২জন ছাত্রকে। যার মধ্যে একজনকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য বিষয়ে ১১টি এবং খেলাধুলায় ৪টি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একবারই একই প্ল্যাটফর্মে এসেছিলো। সেটি হলো বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১সনে। এটা ছিলো এমন এক চেতনা, মানুষকে এক করেছিলো।
ঢাবিকে অসাম্প্রদায়িকতা, মানবিক গুণাবলি, চেতনার ক্ষেত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অসাম্প্রদায়িকতা, মানবিক গুণাবলি, চেতনার বিকাশ ঘটানো, উদার নৈতিকতা- এসকল গুণাবলির অনুশীলন ক্ষেত্র। আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসকল গুণাবলির চর্চা করবে।
হেলাল মোর্শেদ খান বলেন, আমরা যে উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, মানুষ জীবন দিয়েছে, সেই চেতনা যেন হারিয়ে না যায়। এমন যেন না হয়, আমরা মারা যাওয়ার পর আমাদের কবরের উপর স্বাধীনতাবিরোধীরা দাড়িয়ে আমাদের ঘৃণার চোখে দেখে। এজন্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেই যেন তরুণদের প্রথম ভোটটা যেন যায়।
তরুণদের উদ্দেশে নুজহাত চৌধুরী বলেন, তোমরা যেখানেই থাকবে, কখনো স্বাধীনতার চেতনার বিষয়ে আপোষ করবে না। কারণ তোমরা যখন বড় কোনো দায়িত্বে বসবে, তখন মনে রাখবে তোমাদের এই চেয়ার ৩০ লক্ষ মানুষের রক্তে গড়া। এসময় তিনি সামনের নির্বাচনে তরুণদের প্রথম ভোট মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দেওয়ার আহ্বান জানান।