বুয়েটে সাংবাদিকদের মারধর করল ছাত্রলীগ

বুয়েটে সাংবাদিকদের মারধর করল ছাত্রলীগ

সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে শনিবার রাতে বুয়েট ছাত্রলীগের মারধর ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ৩ সাংবাদিক। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলে  হলটিতে গতকাল রাতে এই ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার তিন সাংবাদিক হলেন দৈনিক জনকণ্ঠের  এস এম মুনতাসির জিহাদ, দৈনিক ইত্তেফাকের কবির কানন, দৈনিক কালের কণ্ঠের  মেহেদী হাসান। এদের তিনজনই উপরোল্লিখিত পত্রিকাসমূহের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান তারা তিনজন।কিন্তু ঘটনা অস্বীকার করে বুয়েট ছাত্রলীগ দাবি করে যে, সেখানে অপহরণের মত কোনো ঘটনা ঘটেনি।

হামলার শিকার সাংবাদিকরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে আটকে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে তারা সেখানে যান। হলে প্রবেশ করতে গেলে হলের গেট তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তারা। এ সময় ভেতরে ঢুকতে চাইলে হলের দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী জানান, ভেতরে ঢুকতে ছাত্রলীগের নিষেধ আছে। পরে হলের নিরাপত্তা প্রহরীকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। ভুক্তভোগীরা জানান, হলে প্রবেশ করার পাঁচ মিনিটের মধ্যে শেরে বাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং ভেতরে প্রবেশের কারণ জানতে চান। এ সময় শিক্ষার্থী অপহরণের খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মারধর করা হয়। মোবাইল ফোন, পত্রিকার পরিচয়পত্র ও মানিব্যাগ নিয়ে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের নেয়া হয় হলের ক্রীড়া কক্ষে। প্রায় আধা ঘন্টা ধরে কক্ষটিতে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়।

পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। মারধরের বিষয়ে ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের এক ছাত্রকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ধরে নিয়ে গেছে এমন তথ্য পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। কারণ ঘটনাটির বিষয়ে একেকজন একেক রকম তথ্য দিচ্ছিল। হলের ভেতর প্রবেশ করার পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে মারধর করে।

মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে ঘটনার বুয়েট ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল বলেন, সেখানে শিবিরের এক নেতাকে ধরা হয়েছিল। সাংবাদিকরা সেখানে গেলে বিষয়টি নিয়ে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। এটি দুঃখজনক ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বুয়েটের শেরে বাংলা হল প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।