ছাত্রলীগকে অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল না করে হামলাকারীদের বিচারে কার্যকর ভূমিকা রাখুন : ঢাবিসাস নেতৃবৃন্দ

ছাত্রলীগকে অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল না করে হামলাকারীদের বিচারে কার্যকর ভূমিকা রাখুন : ঢাবিসাস নেতৃবৃন্দ

তিন সাংবাদিকের ওপর বুয়েট ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায়  আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা ব্শ্বিবিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। রোববার সমিতির সভাপতি আসিফ ত্বাসীন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন এক যুক্ত বিবৃতিতে এই দাবি জানান। বিবৃতিতে ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্যথায় সারাদেশের ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান তিনজন সাংবাদিক। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে শনিবার রাতে বুয়েট ছাত্রলীগের মারধর ও হয়রানির শিকার হন এই তিন সাংবাদিক। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলে  হলটিতে গতকাল রাতে এই ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার তিন সাংবাদিক হলেন দৈনিক জনকণ্ঠের ঢাকা এস এম মুনতাসির জিহাদ, দৈনিক ইত্তেফাকের কবির কানন, দৈনিক কালের কণ্ঠের ঢাকা  মেহেদী হাসান। এদের তিনজনই উপরোল্লিখিত পত্রিকাসমূহের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
এর আগে ।কিন্তু ঘটনা অস্বীকার করে বুয়েট ছাত্রলীগ দাবি করে যে, সেখানে অপহরণের মত কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এর আগে ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আবুল বাশারের ওপর হামলা চালায়। ১ ডিসেম্বর পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলী ইউনুস হৃদয়ের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। ১৬ নভেম্বর সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ও এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় দৈনিক যুগান্তরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাব্বি হাসান সবুজের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর এ ধরনের হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত এক মাসে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। অথচ একটি ঘটনাতেও ছাত্রলীগ জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অনেকক্ষেত্রে দায়সারা দুঃখ প্রকাশ করেই তারা ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি প্রদান থেকে বিরত থেকেছে। এ সকল ন্যাক্কারজনক ঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ। অপরাধীদের বিষয়ে ছাত্রলীগ প্রশাসনের এমন অবস্থান অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত।

তারা বলেন, ছাত্রলীগকে অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল না করে হামলাকারীদের বিচারে কার্যকর ভূমিকা রাখুন।