খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চের পৃথক আদেশ

খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চের পৃথক আদেশ

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন কি না, সেই প্রশ্নে বিভক্ত আদেশ দিয়েছে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে। তিন আসনে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে করা খালেদা জিয়ার তিনটি রিটের ওপর ওই আদেশ এসেছে।

আজ মঙ্গলবার হাইকোর্ট বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন যে রায় দিয়েছে, তা স্থগিত ঘোষণা করেন এবং কেন এই এই আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে রুল জারি করেন। পাশাপাশি তিনি খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তাকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার আদেশ দেন। তবে, জ্যেষ্ঠ বিচারপতির আদেশের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. ইকবাল কবির। তিনি খালেদা জিয়ার আদেশ খারিজ করে দেওয়ার মত দেন। এর ফলে খালেদা জিয়া ভোটে ফিরতে পারবেন কি না, তা আপাতত অমীমাংসিতই থেকে যাচ্ছে। 

আদেশের পর খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, “নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্ব করছে, ঠুঁটো জগন্নাথ পরিণত হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে এসেছিলাম। প্রিজাইডিং জাজ নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে তিনটি মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার নির্দেশ দিলেও বেঞ্চের অপর বিচারপতি দ্বিমত পোষণ করেছেন। এখন নিয়ম অনুযায়ী এ মামলার নথিপত্র প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। তিনি বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য অন্য বিচারপতির কাছে পাঠাবেন। আমরা প্রত্যাশা করছি, তৃতীয় বেঞ্চে আমরা ন্যায় বিচার পাব, সঠিক সিদ্ধান্ত পাব।”

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। অপরপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন- ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ইলেকশন এক্সপার্ট মিশনের’ আইন বিশেষজ্ঞ ইরিনি মারিয়া গোনারি।

উল্লেখ্য, গত রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার পক্ষে আলাদা তিনটি রিট করা হয়। তার আগের দিন (৮ ডিসেম্বর) প্রার্থিতা ফিরে পেতে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার করা আপিল নামঞ্জুর করে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনের ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া।

এর আগে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে গত ২ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাইয়ের সময় খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন তিনি।