সবে তো শীতের শুরু। এর মধ্যেই চুলের দফারফা শুরু হয়ে গেছে। যদি না তার আগে থেকেই পরিচর্যায় হাত লাগান আপনি। এর আগের অংশে জানিয়েছি কি করে খুসকি, চুলের অকালপক্কতা রোধ এবং চুলের গোড়া ফেটে যাওয়া থেকে চুলকে রক্ষা করবেন। এবার রইল ঘরোয়া কন্ডিশনার, উকুন তাড়ানোর উপায় এবং চুল ভাল রাখার কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি। তাহলে আসুন জেনে নিই-
ঘরোয়া কন্ডিশনার :
- শ্যাম্পু করার আগের দিন রাতে পুরো চুলে ভালভাবে তেল লাগিয়ে মাসাজ করে নিন। তার পরের দিন ভাল করে শ্যাম্পু করলে চুল নরম মোলায়েম ও চকচকে দেখায়।
- শ্যাম্পু করার পর ১ মগ জলে ১টি লেবু মিশিয়ে নিন। সেই মিশ্রণটি দিয়ে চুল ধুয়ে নিলে চুল হবে চকচকে।
- শ্যাম্পু করার পর চায়ের কড়া লিকার দিয়ে চুল ধুলেও মসৃণ হবে।
- ১ মগ জলে ২/৩ চামচ ভিনিগার মিশিয়ে নিন, শ্যাম্পু করার পর সেই মিশ্রণটি দিয়ে চুল সুন্দর হবে।
- শ্যাম্পু করার পর লেটুস পাতা ফোটানো জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
- শ্যাম্পু করবার পর আগের রাতে ভেজানো মেথি জলে স্নান করুন চুলে চিকন ভাব আসবে।
- এছাড়া কাঁচা দুধে চিরুনি ভিজিয়ে চুল আঁচড়ালে চুল মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়।
- এক চামচ ভিনিগার, এক চামচ ক্যাস্টর অয়েল, এক চামচ ব্রাহ্মী, এক চামচ শ্যাম্পু মিশিয়ে মাথায় লাগান। আধঘন্টা বাদে শ্যাম্পু করে নিন।
- দই, মধু, গ্লিসারিনের মিশ্রণ শুষ্ক চুলের পক্ষে ভালো।
- চুল লালচে নয় এমন চুলে মধু ও অলিভ অয়েলের মিশ্রণ লাগান। তারপর গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে ভাপ নিন।
- অতিরিক্ত তৈলাক্ত চুলে মেহেন্দি গুলে লাগিয়ে নিন। চুলে তেলের পরিমাণ কমবে। চুল হবে চকচকে।
- স্বাভাবিক চুলে শিকাকাই, আমলকি ও দইয়ের প্যাক লাগালে উপকার পাবেন।
- হেনা, পাতিলেবুর রস ও চায়ের লিকার ভীষণ ভালো কন্ডিশনার।
উকুন
চুলের অন্যতম আর এক সমস্যা উকুন। বাজার চলতি বিভিন্ন প্রডাক্ট থাকলেও, কিছু ঘরোয়া উপায়ে এই সমস্যা সমাধান করা যায়।
- ৮ চামচ তেলের মধ্যে ৪ চামচ ন্যাপথলিন গুঁড়ো মিশিয়ে রাখুন। ভালো করে ভেজার পর তেলটি চুলের গোড়ায় ভাল করে ঘষে ঘষে লাগান। ঘন্টাখানেক পরে মাথায় শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
- ৪ চামচ ধুতরো পাতার রস, ৪ চামচ পানের রস, ২ চামচ কর্পূর একত্রে মিশিয়ে মাথায় ঘষলে উকুন সেরে যায়।
চুল সুন্দর রাখার সাধারণ নিয়ম :
- নিয়মিত চুলে ব্রাশ করুন। ধীরে ধীরে চুল আঁচড়ান। আঁচড়ানোর সময় চুল যেন ছিঁড়ে না যায়।
- যে সব ক্লিপ, রাবার ব্যান্ড, পিন, প্লাস্টিকের হেয়ার ব্যান্ড ব্যবহার করেন, সেগুলি ব্যবহার করার সময় লক্ষ্য রাখবেন সেগুলো যেন মাথার চুলের গোড়ায় টান সৃষ্টি না করে। চুলের গোড়ায় টান পড়লে চুল ছিঁড়ে যাবে অথবা ফেটে যায়।
- চুলের ডগা ফেটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডগা কেটে ফেলুন। আজকাল ডগা সিল করে নিয়ে আসা যায়। সুখ্যাত পার্লার থেকে ডগা সিল করে আনতে পারেন।
- এছাড়া চুলের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর জন্য বা একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘের চুল রাখার জন্য প্রতি ১ মাস অন্তর বা দু মাস অন্তর ১ ইঞ্চি করে চুল কাটুন। এতে চুলের বৃদ্ধি সমানভাবে হবে।
- চুলকে প্রখর সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা করতে ছাতা ব্যবহার করুন। চুলে বারবার হিট দেবেন না, হেয়ার স্প্রে বা ল্যাকারও বেশি ব্যবহার করুন।
- চুল পরিষ্কার ও চকচকে রাখতে হলে বাইরে বের হবার আগে লম্বা চুল বেঁধে বের হন। খোলা চুলে বেশি ময়লা জমে।
- এছাড়া প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যুক্ত খাবার খান। খাদ্যে ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই যেন থাকে।