বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে গত পহেলা ডিসেম্বর গাজীপুর জেলার টঙ্গীতে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত হওয়া ছাড়াও দুই শতাধিক ব্যাক্তি আহত হয়েছেন। ওইদিন ভোর ভোর সাড়ে ৫টায় টঙ্গীতে ইজতেমা ময়দানের ১ নম্বর প্রবেশফটকে দিল্লি মারকাজের মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও দেওবন্দপন্থি মাওলানা জুবায়েরপন্থী তাবলিগ জামাতের মুসল্লিদের মধ্যে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে এমন সহিংসতা খোদ ইজতেমাকেই সংকটে ফেলে দিয়েছে। যার কারণে এই ঘটনার মূল কারণ কি তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তাবলিগ জামাতের নেতৃবৃন্দরা অভিযুক্ত করছেন, ওলামা মাশায়েখ তৌহিদী জনতা সংহতি পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। তিনি যতটা না বাংলাদেশের আলেম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন তার চেয়ে বেশি রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করেন।
প্রতি বছর ইজতেমার ব্যবস্থাপনায় কাজ করে থাকে ঢাকার মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। জামেউল উলুম মাদ্রাসার তেমন এক শিক্ষার্থী বলেন, ইজতেমা মাঠ দখল করার উদ্দেশ্যে হামলাকারীদের আসার কথা ছিল শুক্রবার কিন্তু তার না এসে পরদিন ভোরে হঠাৎে করেই আসে। এ থেকেই বোঝা যায় যে হামলাকারীদের উদ্দেশ্যই ছিল সহিংসতা। আর এই সহিংসতার মূলহোতা হিসেবেই সবাই দায়ী করছেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে।
মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের বিগত সময়ের আচরণ রাষ্ট্রবিরোধী ছিল। এমনকি ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী বোমা হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সে সময় তিনি ইংল্যান্ড পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার হন এবং ১৩ দিনের রিমান্ডে যান। তার নিয়ন্ত্রণাধীন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদ বাংলাদেশ নামক এনজিওটিও সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে অভিযুক্ত। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান ছিলেন। বর্তমানেও তিনি আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত।
বিশ্ব ইজতেমা সহিংসতার মধ্যে ফেলে দিয়ে মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ ব্যক্তিগত স্বার্থে ইজতেমার ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করছে ওলামা ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। দেশের কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে তীব্র বিক্ষোভ। দাবি করা হচ্ছে, দোষীদের বিচার।