স্বীকারোক্তি ও অন্যান্য কবিতা

স্বীকারোক্তি ও অন্যান্য কবিতা

স্বীকারোক্তি

 

আমরা সবাই পোশাক খুলে বসেছিলাম

সব প্রস্তাবগুলি সামাজিক ছিল না,

অথচ আমরা সূর্যের খোঁজ করে গিয়েছি

প্রস্তাবগুলির প্রতিটি উচ্চারণে মিশে ছিল অন্ধকার

অন্ধকারের কাছে আমরা সকলে পোশাক খুলে বসেছিলাম।

 

আমাদের কোনও লেজ ছিল না

অথচ দাঁত ছিল

ভয়ঙ্কর খিদের আগুন ছিল

আমরা নিজেরাই পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কায়

ঢেকে রাখছিলাম নিজেদের…

 

হাওয়া থেমে যায়নি

সভ্যতার প্রতিটি সিঁড়িতে

আমাদের দো-টানা মধ্যপন্থী গান ছলকে উঠছিল;

আমরা শিহরনে কাঁপতে-কাঁপতে ভিজে যাচ্ছিলাম রাতভর!

 

একটাই রাস্তা

 

দুই সারি কলাবাগান

মাথা নিচু করে পেরিয়ে যাচ্ছি

পাকা কলার ঘ্রাণ ডাকছে বারংবার

কলাপাতায় জ্যোৎস্না যাচ্ছে গড়াগড়ি

আলোছায়ার জানালা খুলেছে মহাকাল

একটাই রাস্তা আমাদের, রাস্তা জুড়ে রাত্রির গান!

 

নিশিযাপন

 

কৌতূহল, দু’একটা বাড়ি

বাড়ির ভিতর সিঁড়ি

পৌঁছানো যাচ্ছে না

রাত নামছে ছাতে

 

নক্ষত্রের মতো ফুটফুটে বাক্যেরা

রহস্যের আলো নিয়ে পেতেছে খেলা

তাঁদের পাশে বসানো যাচ্ছে না

আমাদের হারানো ছেলেবেলা।

 

অথচ ছাপা হচ্ছে কল্পনা

বিজ্ঞাপনের নিভৃত শয়নকক্ষ

দরজা খুলে ডাকছে পরকীয়া!

 

আমাদের শুধু সামাজিক

ক্রিয়া-বিশেষণকে আঁকড়ে ধরছে পরস্পর

 

কী বলে কার সম্মোধন হবে?

ভাবতে-ভাবতে স্বয়ংক্রিয় রাতে

একঝাঁক সত্য-মিথ্যা নামছে পাখি হয়ে

কোনওটার ধূসর ডানা, কোনওটা উজ্জ্বল!

 

আমরা শুধু ঝিকিমিকির পাড়ায় চেয়ে আছি ছাতে

দু’একটা নষ্ট অনুভূতি ছায়া হয়ে দাঁড়ায় এসে পাশে!

 

শূন্য উত্তর

 

এখনও উন্মুখ হয়ে উঠি

তোমার হাওয়াই চপ্পল হেঁটে যায়

আর চপ্পলে চপ্পলে কাদা ওঠে।

 

ভেজা বই, রঙিন ছাতায় জল পড়ে

হেসে ওঠো, দেখি…

 

বারোমাস এই বাগানে রজনীগন্ধা ফোটে!

 

আমাকে আগুন ছুঁতে আসে

কেন যে আগুন এসে ছুঁতে চায়?

 

স্মৃতিকণাগুলি শামুক হয়ে নেমে যায় জলে

পথের ধারে শূন্যের দিকে মুখ করে দাঁড়াই

আমার ঠুনকো গণিতবোধ

ব্ল্যাকবোর্ডের অন্ধকারে চেয়ে থাকে

নিঃশব্দের শূন্য উত্তর ব্রহ্মময়

শেষ প্রহরের ছুটির ঘণ্টা বাজে!