পৃথিবীকে দ্রুত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে স্মার্টফোন

পৃথিবীকে দ্রুত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে স্মার্টফোন

অনেকটা আলোর গতিতেই যেনো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব। প্রযুক্তির কারনেই পৃথিবী আজ ঘরে বসেই হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। তবে আমরা হয়তো একবারও চিন্তা করে দেখছি না যে এই প্রযুক্তি শিল্প পৃথিবীর পরিবেশের উপর কতটা প্রভাব ফেলছে?

ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, পুরো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিল্পের সকল পণ্য প্রস্তুতকরণে ২০১০-২০২০ এর মধ্যে পরিবেশের উপর তীব্র আঘাত হানতে যাচ্ছে। স্মার্টফোন, মনিটর, সিপিইউ, ল্যাপটপ মোটামুটি সকল রকম পণ্য তৈরিতেই কার্বন নিঃসরণ বেড়ে যাবে বহুগুনে। দিনে দিনে প্রযুক্তি খাতের কারনে পরিবেশ ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। ২০০৭ সালের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায় মোট কার্বন নিঃসরণের ১ শতাংশ ছিল প্রযুক্তি খাত থেকে কিন্তু সম্প্রতি এসেছে ভয়ানক তথ্য! এখন এই খাতে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে ৩ শতাংশেরও উপরে এবং ২০৪০ এর মধ্যে যা গিয়ে দাঁড়াবে ১৪ শতাংশে যা হবে বিশ্বে পরিবহন খাতের অর্ধেকের চেয়ে বেশি!

এই গবেষণায় স্মার্টফোনের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে কারণ খনিজ বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে একটা স্মার্টফোন প্রস্তুতের সময় যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয় সে পরিমাণ কার্বন একটা স্মার্ট ফোন ১০ বছর চার্জদিলেও হয় না। এর মধ্যে স্মার্টফোনগুলোতে প্রতিদিনই আসছে নতুনত্ব আর এই নতুনত্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় দিকটি হচ্ছে বড় স্ক্রিন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যত বড় স্ক্রিন তত কার্বন! ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণার প্রধান গবেষক লটফি বেলখির বলেছেন, “আমাদের গবেষণায় আরো জানা গিয়েছে প্রস্তুতকৃত সকল স্মার্টফোনের ১ শতাংশেরও কম স্মার্টফোন রিসাইকেল করা হয়।”

সবচেয়ে ভয়ানক বিষয় হচ্ছে স্মার্টফোনের অতি তেজস্ক্রিয়তা। পুরো প্রযুক্তি শিল্পে এখন স্মার্টফোন সবচেয়ে বড় জায়গা করে নিচ্ছে। উক্ত গবেষণায় জানা গিয়েছে প্রযুক্তি শিল্পের মোট কার্বন নিঃসরনের ৪৫ ভাগই হচ্ছে এই স্মার্টফোন তৈরিতে। এদিকে মোবাইলের অ্যাপলিকেশন বা অ্যাপ ব্যবহারেও আছে নানান ঝুঁকি। অ্যাপলিকেশন এর প্রত্যেকবার ব্যবহারেই সার্ভার ব্যবহার হয় আর সার্ভার যত ব্যবহার হয় ক্ষতি ততই বাড়ে। এদিকে বেলখির জানিয়েছেন, এগুলো থেকে রক্ষা পেতে নতুন কোন পথ অবলম্বন করতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তির বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল ইতোমধ্যে তাদের কর্মকান্ডের ব্যবহারিত শক্তি নবায়ন যোগ্য করেছে এবং ফেসবুক, গুগল স্যামসাং ও একই প্রক্রিয়াধীন।

‘ফাস্ট কোম্পানি’তে প্রকাশিত গবেষণাটির উপসংহারে বলা হয়েছে, এখনকার জীবনে স্মার্টফোনসহ সকল পন্যই অপরিহার্য এবং ভোক্তারা তা ব্যবহার করবেই আর সে জন্যেই প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো অভিনব পন্থা ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে অ্যাপল’র নবায়ন যোগ্য শক্তি ব্যবহারকে স্বাগতম জানিয়েছেন তারা।