উত্তপ্ত নভেম্বর
আবার এসেছে গরমাগরম নভেম্বর
অক্টোবরের কাজগুলো শেষ হতে না হতেই
অধৈর্য্য সে, দরজায় দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ
চাপড়াচ্ছিল নকার।
চলে এসেছে নভেম্বর
গাঁয়ে সেরম বস্ত্র নেই
হালকা সোয়েটার বা শাল, কিছুই
চিকন শাড়ি আর হাত কাটা ব্লাউজে সে
চলে এসেছে দ্রুত হেটে।
হাতঘড়ির দিকে তাকায় নভেম্বর
সোফার উপর বসতে না বসতেই
যৌবনের ভরা কলস অনেকটা খালি
কালক্ষেপণ করবে না সে আর।
অক্টোবরের সমস্যা নিয়ে কথা হব আজ
এরই মধ্যে, আর এই মাসের এজেন্ডা তো আছেই।
গত সব ক’টা মাসের, না, বরং বছরগুলোর
রিপোর্ট এখনও বাকি
ব্যাকলগ হয়ে গেছে অনেকখানি
শেয়ার মিস-ম্যানেজমেন্ট!
নভেম্বর ড্রয়িংরুমের ছাদের দিকে
ধোয়ার গোলক ছাড়ে
এইবারে উপায় নেই
ম্যানেজমেন্ট হাত বদল হবে।
আমি থাকব তোমার পাশে
আজ আবার তোমার পাশে ঘুমাব আমি
কেউ টের পাবে না, হয়তো তুমিও না
মাঝে মাঝে ঘুমাবার সময় মনে হবে
চোখের পালকের মত মৃদু কোন ছোঁয়া
তোমার গাল ছুঁয়েছে
এক মধ্যম নিঃশ্বাস ফেলে আবার
ওপিঠ ঘুরে শোবে
বালিশের নরম বুকটাকে আরও নরম করে ধরে
রাখবে মাথার নীচে।
আবার মনে হবে তোমার পাঁজরের নীচে
কে বা স্পর্শ করল
আনমনা কাঁথা কে টানটান করে ধরে রাখবে
তোমার সুঠাম শরীরের
উপর।
আমি থাকব তোমার পাশে
স্বপ্নেও আসব
সকালে সে স্বপ্ন ভুলে যাবে
তবু এক আবছায়া বিস্মৃত খেয়াল
থাকবে অবচেতনে।
অনামিকা
রেজিস্ট্রি করলে যায়
দেরিতে, তাছাড়া রাষ্ট্রীয় ডাকঘরের
ভরসা নেই এখন, অনেক কিছুই
চুরি যায়, এ সব দিনে।
ইমোটিকন দ্বারা মেসেঞ্জারের
মাধ্যমেও পাঠাতে পারতাম, কিন্তু
তুমি জেনে যেতে
পরিচয়।
কুরিয়ারেও যেত হয়তো, তবে
ওদেরকেও দিতে হত নিজের
নাম ঠিকানা।
তাই এই কবিতার
মাধ্যমে পাঠাচ্ছি
আমার কোমল অনুভূতি
যার নাম
এখনও ঠিক করতে পারিনি।
ছোট চারার মত ধীরে
ধীরে, মাটির বক্ষ চিরে
উঠে আসছে।
শিশু-কৌতুহলী চোখ
খুলেছে, নভেম্বরের
কুয়াশাচ্ছন্ন, উষ্ণ-শীতল
বায়ুমণ্ডলে,
অন্তরঙ্গ আলিঙ্গন
তুমি করবে বলে।
বিবেকের কারবালা
পানি পানি পানি
বলে এই দিনে
হাহাকার করেছিল তারা
পানির আশায় আকাশের দিকে চেয়ে থাকে
হাজার মানুষ রৌদ্র-তাপে পুড়ে
মোহাররমের এই দিনে
কারবালার মাঠে।
আজও পানি চাইছে লক্ষ রোহিঙ্গা
দয়ার পানি, করুণার জল।
মানুষের ভিড়ে যদি মানুষকেই হারিয়ে ফেলি হায়
কোন নবী এসে কোন জমজমের জল দিয়ে
পবিত্র করবেন আমাদের?
আইনের মাঠে, কোর্ট-প্রাঙ্গনেও, চলছে আজব খেলা
পানি!!
বলে চিৎকার করছে বৃক্ষ।
শত বছরও এমন প্রতারণা দেখেনি!
পানি!!
বলে ডাকছে ঘাস।
মানুষ কি শুধু নামেই মানুষ?
বিবেক কে কি ময়লার বিনে ফেলা যায়?
পানি পায় পিপাসিত, যদি খোঁজে।
কিন্তু কে বাঁচাবে তাকে, যার
তৃষ্ণাই নেই?
মেডুসা
(যুবতী চিত্রশিল্পী আফ্রিদা তাঞ্জিম মাহি এর অসাধারণ চিত্রকলা এবং পরবর্তী আত্মহনন অবলম্বনে)
জীবনের ইঞ্জিনটা স্টার্ট দিচ্ছে বেশ
নামকরা আর্টস্কুলে স্কলারশিপটাও হল!
প্রেস কনফেরেন্স, নিউজ কাভারেজ, প্রদর্শনী
সবই তো হচ্ছে!
সবই তো তোমার জন্য মেডুসা!
কি অদ্ভুত মাথায় ভর করেছ
আমার ওই পেইন্টিংটাতেও যেন কিলবিল করছ
একাকীনি আমার, একান্তভাবে পাওয়া
জীবন-যৌবন বিকর্ষণে,
আমার দংশন-তৃপ্তিতে
তোমার ভক্ষণ-তুষ্টতায়।
তবে মনে রেখ
কাল কিন্তু লোকের ভিড় হবে
ঝুলন্ত দেহটাকে
সরিয়ে নেবার জন্য।