খাশোগির খুনিদের মুত্যুদণ্ড দাবি সৌদি অ্যাটর্নি জেনারেলের

খাশোগির খুনিদের মুত্যুদণ্ড দাবি সৌদি অ্যাটর্নি জেনারেলের

ওয়াংশিংটন পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেল সৌদ আল-মোজিব। এই হত্যাকাণ্ডে নির্দেশ দানকারীসহ মোট ৫ জনকে দোষী সাব্যস্থ করা হয়েছে।

সৌদ আল-মোজিব আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান। তিনি তাদের সকলেরই মৃত্যুদণ্ড চান যারা খাশোগির সাথে প্রথমে আলোচনায় বসেন এবং বনিবনা না হলে তাকে প্রথমে মাদক দান করে এবং পরবর্তীতে লাশ ছিন্নভিন্ন করে।

তিনি আরো বলেন, সৌদির মহান রাজপুত্র মোহাম্মদ বিন সালমান জঘন্য হত্যাকাণ্ডে কোনভাবেই জড়িত নন। এই হত্যাকাণ্ডে সালমানকে জড়িয়ে যে আন্তর্জাতিক উত্তাপ ছড়ানো হয়েছে তা সম্পন্ন মিথ্যা।

খাশোগি ছিলেন সালমানের সংশোধন কার্যক্রমের অন্যতম সমালোচক। গত অক্টোবর মাসের দুই তারিখে তুরস্কে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেট ভবনে তাকে হত্যা করা হয়। তিনি কনস্যুলেটে তার ডিভোর্সের কাজে গেলে খুব অল্প সময়েই এই হত্যাকাণ্ড করা হয় বলে জানা গিয়েছে।

মোজিব জানান খশোগিকে মারা হয় লিথাল ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে এবং তার মৃত্যুর পর তার শরীরকে টুকরো টুকরো করে তার লাশ ভবন থেকে বের করা হয়।

প্রথম দিকে সৌদি কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করে জানিয়েছিলো যে খাশোগি পেছনের দরজা দিয়ে কনস্যুলেট ভবন ত্যাগ করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তার স্বীকার করতে বাধ্য হয়।

মোজিব জানান ২১ জনকে আটক করা হয়, এর মধ্যে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাও দেয়া হয়েছে এবং এখনো আইনি প্রক্রিয়া চলছে। এদের মধ্যে সৌদ আল-কাহতানিও আছেন যিনি সৌদির সর্বোচ্চ রাজকীয় আদালতের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। তার উপর আরো তদন্ত চলছে এবং তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞাও দেয়া হয়েছে।

গত বছর সৌদি আরব, আবর আমিরাত, বাহরাইন, মিশর একটি কূটনৈতিক এবং বাণিজ্য বন্ধনে আবদ্ধ হয় যা এবং এর অবস্থান ছিলো ঘোর কাতার বিরোধী। সেই সময় আল-কাহতানি  #TheBlacklist নামে একটি অনলাইন কর্মসূচি চালু করেন। সেখানে তিনি সকল সৌদিবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান যেনো এই হ্যাশট্যাগ দিয়ে সে সকল সৌদিবাসীকে যেন চিহ্নিত করা হয় যারা কাতারের পক্ষে কথা বলে।

এদিকে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মেভলুত কাসুগলু দাবি করেন যেনো সকল দোষীকে তাদের সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তুরস্ক সরকার চায় সকল দোষীর সাজা তুরস্কের আইন মতেই করতে। তিনি বলেন “যদিও হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই তবুও তুরস্কের আইন মতে তুরস্কের আদালত এই বিচার করার এখতিয়ার রাখে।

তিনি আরো কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন “এখনো পর্যন্ত অনেক প্রশ্ন উঠে আসে যার উত্তর পাওয়া যায়নি। তার লাশের অবশিষ্ট কোথায়? তার চূড়ান্ত ভাবে কি হয়েছে? তার লাশ কে পুড়িয়েছে, কবর দিয়েছে বা টুকরো করেছে? আমরা এসকল প্রশ্নের উত্তর চাই।”

এদিকে তুরস্কের সরকার সহ বিশ্ব গণমাধ্যমে সৌদির এই বিচার কার্য নিয়ে সন্দেহের নানা বাণী আসছে। এদিকে অনেক গণমাধ্যেমেই এই খবর প্রকাশ হতে দেখা গিয়েছে যে সন্দেহের তীর এখনো রাজপুত্র সালমানের দিকেই আছে। আর তুরস্ক সরকারও চাচ্ছে না যে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার সৌদিতে হোক। তারা এই বিচারের বস্তুনিষ্ঠতা নিয়ে সংশয়ে আছেন।