বিএনপি মিছিলে পুলিশী হামলা! গাড়িতে আগুন দিয়েছে ‘হেলমেট’ বাহিনী!

বিএনপি মিছিলে পুলিশী হামলা! গাড়িতে আগুন দিয়েছে ‘হেলমেট’ বাহিনী!

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখেই আবার সহিংসতা বাড়তে শুরু করেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। আজ নয়াপল্টনে অবস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকা হয়ে ওঠে রণক্ষেত্র। জানা যায়, সকাল থেকেই বিএনপির মনোনয়ন ক্রয়ের উৎসব পালনে জনসমুদ্রে পরিণত হতে থাকে নয়াপল্টন এলাকা। নেতা-কর্মীদের মিছিলে শুরু থেকেই বাঁধা দিয়ে আসছিল পুলিশ। বিশাল মিছিলটিকে বার বার রাস্তা থেকে সরে যেতে নির্দেশ দিচ্ছিল পুলিশ। তারপর পরই ঢাকা-৮ আসনের মনোনয়ন ফরম কিনতে বিশাল এক মিছিল নিয়ে আসেন মির্জা আব্বাস এবং তার নেতাকর্মীরা। ঠিক তখনই পুলিশ গাড়ি উঠিয়ে দেয় মিছিলটির উপরে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে আসলে লাঠি চার্জ করে পুলিশ। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। মুর্হুমুহু রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস ছোড়ে পুলিশ এতে বিএনপি এর ১২ নেতাকর্মী আহত হয়েছে, আহতের সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে ঘটনায় দু’একটি সংবাদমাধ্যম ব্যাতিত মোটামুটি সকলেই একপেশে সংবাদ প্রচার করেছে। সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হয়েছে, বিএনপির নেতাকর্মীরাই প্রথম আক্রমণ করেছে। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, পুলিশই মিছিলের উপর গাড়ি তুলে দিয়ে লাঠিচার্জ করে, এতেই বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে নেতাকর্মীরা।

পুলিশের একটি ভ্যানসহ দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং পুলিশ দাবি করেছে, এই অগ্নিসংযোগ বিএনপির কর্মীরা ঘটিয়েছে। বিএনপি সে অভিযোগ প্রত্যাখান করে এটিকে সরকারের ষড়যন্ত্র বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে। আদতে তাই প্রমানিত হয়েছে। পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়া অবস্থায় একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে একজন পুলিশের গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, আগুন দেয়া ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় তিনি গুলশান থানা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক অপু। আজকের সহিংসতার মধ্যেও লাঠিসোটা নিয়ে ‘হেলমেট বাহিনী’ লক্ষ্য করা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি পুলিশের লাঠিচার্জে যখন বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ তখনই হঠাৎ হেলমেট পরা কয়েকজন তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে।

হামলা এবং সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মিডিয়ার সামনে কথা বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে সরকার। আওয়ামীলীগ শোডাউন করল, এতকিছু করল, কিছু হল না। আর বিএনপি নেতা-কর্মীদের কেন সরিয়ে দেয়া হল?” অন্যদিকে আওয়ামী লীগ আজকের ঘটনাকে শুধু নাশকতা হিসেবেই দেখছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছবিই বলে দিয়েছে, নাশকতা মূলে কে বা কারা!

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য অংশ নিচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সেক্ষেত্রে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ডের নমুনাতো দেশের মানুষের সামনে পরিস্কার। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও বেতার তো এখনো সরকারের গুণগান গেয়ে চলেছে। মাঠের পরিস্থিতিও হতাশাজনক। এর মধ্যে আজ দেখা গেল, বিরোধী শক্তির নেতারা নির্বিঘ্নে তুলতে পারছেন না মনোনয়নও।