বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আবারো একতরফা হতে চলেছে, এমনটাই আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা’য় প্রকাশিত একটি মতামত। গত সোমবার নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ২৩শে ডিসেম্বর থেকে পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর করে আওয়ামী লীগের অনুগত বিরোধী দলগুলোরই সন্তুষ্টি অর্জন করেছে বলে জানিয়েছে তারা।
এদিকে সরকার দলের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রধান রাজনৈতিক শক্তির সাথে সংলাপের পরেও তাদের কোনরকম দাবি না মেনে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখনো নির্বাচন আরো একমাস পিছিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। তারা কোনভাবেই চাচ্ছে না শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে কোন মন্ত্রীসভার মাধ্যমে এই নির্বাচন হোক। এদিকে আওয়ামীলীগ চায় বর্তমান সরকারই ক্ষমতায় থেকে তাদের মন্ত্রীসভা বলবত রেখেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে।
এটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল বেশ উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইলাম প্রায় ঘোষণা দিয়েই বলেছেন, বাংলাদেশের একতরফা কোন নির্বাচন এবার কোনভাবেই মেনে নিবে না যুক্তরাষ্ট্র। এর পরপরেই বিশ্ব গণমাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা দেখা গেছে।
এদিকে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আগে থেকেই এমন দাবি করে এসেছে যে নির্বাচনের তারিখ এভাবে দেওয়ার একমাত্র কারণ একতরফা নির্বাচন আয়োজন। ২০১৪ সালের আগের নির্বাচনগুলোতে এক দল অন্যদলের উপর কোন আস্থা না রাখার কারনেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা চালু হয়। এরপর ২০১৪ সালেই প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায় হয়েছে জাতীয় নির্বাচন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সেই অনাস্থা আরো চরমে উঠেছে বলে আল-জাজিরায় অভিমত ব্যাক্ত করেছেন বাংলাদেশ-আমেরিকা ভূরাজনীতি বিশেষজ্ঞ শাফকাত রাব্বি।
আল-জাজিরায় লেখা ওই কলামে রাব্বি আরো লিখেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে গিয়েছে। ২০০৮ সালের পর থেকে শেখ হাসিনার শক্ত শাসন, উন্নয়ন এবং গনমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রন করাতেই একদলীয় এই শাসন ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন শেখ-হাসিনা। এদিকে রাজনৈতিক ঘুম-খুন, সন্ত্রাস এবং গণগ্রেফতারের মাধ্যমে দলের বা সরকারের বিরুদ্ধচারণ করতে পারে এমন লোকের সংখ্যাও কমিয়ে এনেছেন তিনি। তার এরকম শক্ত এবন মৌলবাদী অবস্থানের কারণেই তার আমলে বা তার মন্ত্রীসভার ক্ষমতায় নির্বাচনটি হবে সম্পুর্ণ একদলীয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।