ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ, সংলাপে দাবি না মানলে রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ

ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ, সংলাপে দাবি না মানলে রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পুনরায় একবার তার ‘জনসমর্থন’ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলকে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐক্যফন্টের জনসভায় যোগ দেয় লাখ লাখ জনগণ। এই জনসভা শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না, বরং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে গঠিত রাজনৈতিক ঐক্যের পরবর্তী কার্যক্রম কি হবে বা হতে যাচ্ছে সে বার্তাও ও জনগণের কাছে পৌঁছানোর ছিল।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে দ্বিতীয় দফার সংলাপে সরকার দাবি না মানলে পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে রোডমার্চ করে রাজশাহী যাবেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সেখানে গিয়ে ৯ নভেম্বর শুক্রবার জনসভায় যোগ দেবেন তারা।

ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল বলেন, রাজশাহীর জনসভার পর তারা ময়মনসিংহ, খুলনা ও কুমিল্লায় যাবেন। এ ছাড়া তারা নির্বাচনের তফসিল পেছানোর দাবিতে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা করবেন।

জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমার বক্তব্যের সময় নাই। আমি শুধু আপনাদের সামনে এ কথা বলতে এসেছি, পিজি হাসপাতালের ছোট একটি কক্ষে তিনি (বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) বন্দি। আমি বিশ্বাস করি জনগণের এই আওয়াজ তার কানে পৌঁছে যাচ্ছে। সেখান থেকে তিনি বলছেন, তোমরা এগিয়ে যাও, জনগণের দাবি আদায় করো।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে বলেছেন, আমি কারাগারে যেতে ভয় পাই না। গণতন্ত্রের জন্য, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য কারাগারে যেতে প্রস্তুত আছি। আপনারা সবাই একটি জাতীয় ঐক্য গঠন করুন। আজ আমি খুশি একটি ঐক্য গড়ে উঠেছে। সবাই এক মঞ্চে তার (খালেদা জিয়া) মুক্তির দাবি করছেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটা প্রহসনের সংলাপ করেছে। বলেছে, আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করবে না। কিন্তু একটু আগেও আমাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব চলবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আগামীকাল আবার সংলাপে যাব। সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাই। কিন্তু সংলাপের নামে নাটক বন্ধ করুন। জনগণের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা দাবি মেনে নিন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় ঐক্যের শীর্ষ নেতা গণেফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সমাবেশে বলেন, “আপনারা পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায়, জেলায় জেলায় দাঁড়িয়ে যান। দেশ আবার স্বাধীন হবে। জনগণ আবার তাদের মালিকানা ফেরত পাবে।” তিনি আরও বলেন, “এ দেশে কোনো রাজতন্ত্র নেই। এ দেশ কোনো মহারাজা-মহারানির নয়। ১৬ কোটি জনগণের এ দেশে সরকারি দলের জন্য এক আইন আর বিরোধীদের জন্য অন্য আইন, এমনটা চলতে পারে না।”

সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দাবি করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিন। অন্যথায় আপনাদের কঠিন জবাব দিতে হবে।’

সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তিসহ সাত দফা দাবিতে ওই জনসভার আয়োজন করা হয়। সমাবেশে এছাড়াও ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন। এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে ঐক্যফন্টে যোগ দেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পরবর্তী কর্মসূচি

৭ নভেম্বর ২০১৮ : গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপ

৮ নভেম্বর ২০১৮ : সংলাপে দাবি না মানলে রোডমার্চ

৯ নভেম্বর ২০১৮ : রাজশাহীতে সমাবেশ