আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক জঘন্য খেলায় মেতে উঠেছে আমেরিকা। আবারো ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। ইরানের পরমানু কর্মসূচি রোধেই এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ২০১৫ সালে পরমানু চুক্তির পরে বারাক ওবামার শাসনামলে শিথিল করা হয়েছিল এই সকল নিষেধাজ্ঞা। এরপরেই ইরান উন্মুক্ত ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ডলারের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি করে আসছিলো। তবে হঠাৎ করেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরকার আবার সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল করলো।
এদিকে গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে হয়ে যাওয়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ চলাকালীন সময়ে ইরানের সাথে বৈঠক করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন এবং রাশিয়ার সাথে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় ইরান ইউএস ডলার ছাড়াই ইইউ দেশভুক্ত এবং চীন-রাশিয়ার সাথে যেকোন নৈতিক বাণিজ্যে যেতে পারবে। এর পরেই ব্যাপারটা আমেরিকার নজরে আসে এবং তারা এই বিষয়টি ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারেনি। এর ফলে আমেরিকার ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করলে ভালোভাবে নেয়ার প্রশ্নও ওঠেনা। এরপরেই আসে এমন সিদ্ধান্ত। মূলত ইরানের জ্বালানী তেলের বাণিজ্য এবং ব্যাংকিং খাত ধসিয়ে দিতেই এই নিষেধাজ্ঞা।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রপতি রোহানি রাষ্ট্রীয়গণমাধ্যমে বলেছেন “আমেরিকায় চায় আমাদের জ্বালানি তেলের বিক্রি বন্ধ করতে। আমরা বন্ধ করব না। আমরা আমাদের তেল বিক্রি করব, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা ভাঙ্গবো।” আর ইরানের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক প্রতিনিধি কাশেমি জানিয়েছেন “এই নিষেধাজ্ঞা একটী যুদ্ধ যা ওয়াশিংটন শুরু করেছে। নিষেধাজ্ঞা আরোপে আমেরিকা আসক্ত হয়ে পড়েছে। তেহরান এই নিষেধাজ্ঞাকে বৃথা প্রমাণ করবে।”
আমেরিকার এমন সিদ্ধান্তে ইরানে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিক্ষোভ। ইরানের রাজপথে নেমে এসেছে অসংখ্য ইরানি নাগরিক। যুক্তরাষ্ট্রের পতাকার মাড়িয়ে এবং পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তারা। এদিকে ইরানের সামরিক সেনা প্রধান মেজর জেনারেল জাফরি আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তাদের একটি সীমার মধ্যে থাকার পরামর্শও দিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, “আমি আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে অদ্ভুদ কিছু বলতে চাই। কখনই ইরানকে হুমকি দিতে আসবেন না। আমরা দেখেছি মরুভূমিতে আপনাদের সেনাদের ক্রন্দনরত চেহারা। আমেরিকার অনেক সৈনিক যুদ্ধক্ষেত্রের বিষন্নতায় আত্মহত্যা করছে আমরা সেটাও জানি।”
অন্যদিকে মধ্যবর্তী নির্বাচনীয় এক জনসভায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প বলেছেন “ইরান ইতোমধ্যে নানা চাপে জর্জরিত। তারা বেশি দিন টিকে থাকতেও পারবে না।”
তবে ইরানের সাথে আমেরিকার এমন সম্পর্ক যে আগামীতে মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা আরো উত্তপ্ত করে তুলবে এমনটাই ধারণা করছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।