পাকিস্তানে বন্ধ হচ্ছে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার

পাকিস্তানে বন্ধ হচ্ছে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার

পাকিস্তানে উচ্চ আদালতের নির্দেশে দেশটিতে বন্ধ হচ্ছে ভারতীয় সকল টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার। গত শনিবার দেশটির প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসার এই আদেশ দেন। ১৯৬৫ সালে প্রথম এমন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও ২০০৮ এ তা তুলে নেয়া হয়।

ইতোমধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সকল ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। মূলত ভারত পাকিস্তানে বহমান নদ-নদী গুলোতে বাধ সৃষ্টি করায় ভারতের উপর চাপ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। নির্দেশ নামায় বিচারপতি সাকিব নিসার উল্লেখ করেন, ভারত পাকিস্তানে বহমান নদ-নদীগুলোকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

তবে ভারত এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারতের মতে নদ-নদীগুলোর গতি প্রকৃতির উপর নির্ভর করে যতটুকু পানি পাওয়া উচিৎ ততটুকুই পায় পাকিস্তান। জানা যায়, পাকিস্তানের কৃষি অঞ্চলগুলোর প্রায় পুরোটার সেচ কাজই চলে সিন্ধু নদ এবং এর শাখা-প্রশাখাগুলোর পানি দিয়ে। এবং এই অববাহিকার উৎপত্তিস্থল হিমালয় পর্বতমালা থেকে। ভারত সিন্ধু নদসহ প্রায় সকল শাখা নদ-নদীগুলোতেই তাদের নিজস্ব বাধ দিয়েছে। এর ফলে পাকিস্তানের কৃষি বিরাট ক্ষয়-ক্ষতির মধ্যে পড়ছে বলে জানা গিয়েছে।

ভারতের উপর চাপ সৃষ্টির কারণে উচ্চ আদালতের টেলিভিশন চ্যানেল এর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের এমন সিদ্ধান্ত সে দেশের সাধারণ মানুষও সানন্দে গ্রহণ করেছে। তাদের সংস্কৃতি কর্মী অনেকেই রীতিমত খুশি। তাদের মতে আভ্যন্তরীন সিনেমা এবং শোবিজ শিল্পগুলো নিজেদের আবার প্রমাণ করার সুযোগ পাবে। তবে ইন্টারনেটের মত এমন উম্মুক্ত প্রযুক্তির এই যুগে অনেক সংস্কৃতি কর্মী শুধু টেলিভিশন চ্যানেলের উপর নিষেধাজ্ঞা যথাযথ মনে করছেন না। তাদের মতে ইন্টারনেটেও ভারতীয় অনেকে মনোরঞ্জন মাধ্যম আছে এবং সেগুলোর উপরও নিষেধাজ্ঞা জারির আহ্ববানও জানান তারা।

পাকিস্তানের এমন সিদ্ধান্তকে ভারতীয় অনেক গণমাধ্যমকর্মী হিংসাত্মক সিদ্ধান্ত হিসেবেই দেখছে। তবে ভারতের সাধারণ মানুষের মধ্যে এই সংবাদের তেমন কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় নি। তবে এমন খবরে বাংলাদেশের অনেকেই বিস্মিত। বাংলাদেশেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন অনেকে। উল্লেখ্য ফারাক্কা বাধ, তিস্তা ব্যারেজের মত নানা বাধের কারণে বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোর সাধারণ অববাহিকারও নানান সমস্যা দেখা দিয়েছে। উত্তরাঞ্চল মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে। পানি বন্টনে ভারতের এমন একনায়ক সিদ্ধান্তকে অনেকেই কঠোরভাবে বিরোধিতা করে আসছে।