ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের খসড়া তালিকা উদ্বোধন করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। আজ দুপুর ১২টায় ভিসি অফিস সংলগ্ন অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই তালিকা উদ্বোধন করেন তিনি।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মোহাম্মদ সামাদ, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. নাসরিন আহমাদ, প্রোক্টর গোলাম রাব্বানিসহ বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।
তালিকায় মোট ১৮টি হলের ৩৮,৪৯৩ জন শিক্ষার্থীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৩,৯৮৪ জন ছেলে ও ১৪, ৫০৯ জন মেয়ে। খসড়া ভোটার তালিকার হার্ড কপি হল অফিসে সংরক্ষিত থাকবে। তালিকার সংশোধনী (সংযোজন, বিয়োজন বা পরিমার্জন)-এর জন্য আগামী ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট হল প্রাধ্যক্ষ অফিসে লিখিতভাবে জানাতে হবে। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ভিজিট করে এই তালিকা দেখতে পারবেন।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যাচাই বাছাই শেষে আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে গত তিন মাস যাবৎ হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের তথ্য হালনাগাদ করে কর্তৃপক্ষ।
আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এই ডেটাবেইসকে, ডাকসু নির্বাচনের জন্য খসড়া ভোটার তালিকা হিসেবে উল্লেখ করা হলেও ডেটাবেইস উদ্বোধনের সময় উপাচার্য বলেন, এটিকে ডাকসু নির্বাচনের ভোটার তালিকা বলা কঠিন, বলা যায় হলভিত্তিক শিক্ষার্থী তালিকা। ডাকসু নির্বাচনপ্রক্রিয়া শুরু হলে ডাকসুর সংবিধানের আলোকে এখান থেকে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
এই তালিকার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দিকে লাভবান হবে জানিয়ে উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান বলেন, এই তালিকা প্রশাসনকে গতিশীল করবে। শিক্ষার্থীরা দ্রুততার সাথে তথ্য পাবে। দৌড়ঝাঁপের মতো ঝামেলা থাকবে না।
ডাকসু গঠনতন্ত্রে কোনও প্রকার সংশোধন হবে কি না?— এমন প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য বলেন, প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে গঠনতন্ত্রে সংশোধন আসতে পারে।
নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এই তালিকার সংশোধন-পরিমার্জনের কাজ চলবে। হল প্রাধ্যক্ষদের মাধ্যমে ছাত্ররা এই সংশোধন-পরিমার্জনের কাজ করতে পারবে। এর পরই ধারাবাহিক প্রক্রিয়াই নির্বাচনের সময় জানিয়ে দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আগামী বছরের মার্চ মাসে ডাকসু নির্বাচন করার লক্ষ্যের কথা জানায় উপাচার্য। তবে আজ নির্বাচনের সময়কাল সম্বন্ধীয় প্রশ্নে স্পষ্ট কোনও উত্তর দেননি তিনি।
সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ৬ জুন ডাকসু নির্বাচন হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের দাবি-দাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই ৪৭ বছরে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ছয়বার। অথচ নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা।