জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঘিরে আশায় জনতা, আশঙ্কায় আওয়ামী লীগ

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঘিরে আশায় জনতা, আশঙ্কায় আওয়ামী লীগ

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। শুরুতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়া ডা. বি চৌধুরী নিজেদের অতিকৌশলী আচরণের কারণে ছিটকে পড়েছেন শেষ পর্যায়ে। জামায়াত ইস্যু সামনে এনে সরকারি নানা তালবাহানা বাস্তবায়নেই ব্যস্ত ছিলেন তিনি এবং তার পুত্র মাহি বি চৌধুরী। তবে কয়েকদিন আগে সিলেটে এবং চট্টগ্রামে ঐক্য ফ্রন্টের সমাবেশের পর অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের কাছেই শোনা যাচ্ছে শক্তিশালী অবস্থানেই আছে ঐক্যফ্রন্ট। প্রতিটি সমাবেশেই দেখা গেছে জনতার উপচে পড়া ভীড়।

নানা তালবাহানা শেষে সিলেট ও চট্টগ্রামে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছিল ঐক্যফ্রন্ট। শুরুতে লালদিঘী ময়দানে সমাবেশের অনুমতি চাইলে তা মিলেনি। পরে সমাবেশের একদিন আগে পুলিশ চট্টগ্রাম বিএনপি অফিসের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে আসতে থাকে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা। ড. কামাল হোসেন এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকালে চট্টগ্রাম পৌঁছলে শাহ আমানত (রা.) এর মাজার জিয়ারতের পর দুপুরে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্য’র প্রধান মাহমুদুর রহমান মান্না, জে এস ডি প্রধান আব্দুর রব এবং বিএনপি’র শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীরা।

সমাবেশে ব্যারিস্টার মইনুলসহ সকল নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং অচিরেই বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবি জানানো হয়। সমাবেশে ড. কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি এখন আর চাওয়ার কিছু নাই, হওয়ার বিষয়। তিনি সরকারকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলেও জানান। উল্লেখ্য, এই সমাবেশের প্রস্তুতিকালীন সময়েই চট্টগ্রামে গ্রেফতার হন বিএনপি নেতা আমীর খসরু। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সময়কালীন এক ফোনালাপের জের ধরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে আওয়ামীলীগ নেতা হাসান মামুদ মিডিয়াকে জানান ঐক্যফ্রন্টের আরো নেতা গ্রেফতার হতে পারে। এই তথ্যের উপর সমাবেশে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আরো জানান, জনগণের আস্থা তৈরি হয়েছে ঐক্যফ্রন্টকে ঘিরে। এই আস্থায় ঐক্যফ্রন্টের শক্তি আর এই আস্থার বলেই ৭ দফা দাবি আদায় করা হবে।

এদিকে সিলেট ও চট্টগ্রামের এই সমাবেশে জনগণের ভালো সাড়া পাওয়া গিয়েছে। মানুষের উপস্থিতিও ছিলো উপচে পড়া। সমাবেশে আসা অনেক সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জানা যায় এতদিন পর একটা শক্তিশালী বিরোধী শক্তি আসায় তারা আশায় বুক বাঁধছেন। বিরোধীদের সুস্থভাবে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে দেশে একটি সুস্থ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি তাদের। উপস্থিত জনসাধারণের স্লোগানে এও শোনা যায় যে, তারা ২০১৪ সালের মত একতরফা নির্বাচন আর চান না। জনগণের এমন সাড়া পাওয়াতে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা এটা নিশ্চিত যে, তাদের উপর সাধারণ জনগণের আস্থা আছে। তবে আওয়ামীলীগ এতে অনেকটাই শঙ্কিত। এক তরফা সাজানো নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় আসার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলা সরকারের মধ্যে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের নিয়ে প্রতিদিনেই মিডিয়াতে নানান বক্তব্য দিয়ে চলেছেন।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে উৎসাহ ও আশার ঝিলিক। আশঙ্কা শুধু আওয়ামী লীগের ঘরে।