ফুটবলের ছোট পাখি, গ্যারিঞ্চা

ফুটবলের ছোট পাখি, গ্যারিঞ্চা

১৯৩৩ সালের আজকের দিনে ব্রাজিলের পাঁউ গ্রান্ডি গ্রামে জন্ম নিয়েছেন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ড্রিবলার ম্যানুয়েল ফ্রান্সিসকো দস সান্তোস। যাকে পুরো ফুটবল বিশ্ব গ্যারিঞ্চা নামে চিনে। গ্যারিঞ্চা একটি পর্তুগীজ শব্দ যার অর্থ হচ্ছে “ছোট পাখি”। গ্যারিঞ্চাকে আদর করে তার বোন ছোটবেলায় এই নামটি দিয়েছিলেন। জন্ম নিয়েছিলেন ফুটবলের তীর্থ ভূমি ব্রাজিলে, তাই ছোট বেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি ছিল তার অসামান্য ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার টানেই তার ফুটবল মাঠে বিচরন। সে সময় তার পায়ের জাদুতে মুগ্ধ হয়েছিলো পুরো ফুটবল বিশ্ব। ছোট ছোট পায়ে দ্রুত ছুটে চলা এবং দূর্দান্ত সব ড্রিবলিং সব মিলিয়ে একজন স্বয়ং সম্পূর্ণ ফুটবলার ছিলেন তিনি। অনেকের মতে পেলের পর তিনিই ব্রাজিলের দ্বিতীয় সেরা ফুটবলার। ১৯৫৮,১৯৬২ টানা দুইটি বিশ্বকাপ জয়ী দলের সঙ্গী ছিলেন তিনি। আর ১৯৬২ বিশ্বকাপ জয়ে তার অবদান ছিলো আকাশচুম্বী। বলতে গেলে সেই বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে একাই টেনে নিয়ে গেছেন গ্যারিঞ্চা। তার ফুটবল ছন্দ এতোটাই মুগ্ধ করেছিলো যে, ১৯৬৩ সালে ইতালির ফুটবল ক্লাব জুভেটাস, এসি মিলান, ইটার মিলান বিরল একটি প্রস্তাব করে গ্যারিঞ্চাকে। তিনি একই সাথে ৩ টি ক্লাবের হয়ে খেলবেন। একেক সিজনে এক এক ক্লাবের হয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত গ্যারিঞ্চা এই চুক্তিতে রাজি হন নি। তাছাড়া বর্তমান ফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যান্ট “ওলে”। এটি তার অনুপ্রেরণা থেকেই ফুটবল ফ্যানরা শুরু করেন।

ক্যারিয়ার ও জাতীয় দলের পারফর্মেন্স বিবেচনায়ও গ্যারিঞ্চা ব্রাজিল এবং ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা একজন খেলোয়াড়। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ৫০ টি মাচ। গোল করেছেন ১২ টি। ১৯৬৮,১৯৬২ ও ১৯৬৬ তিনটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহন করে দুটিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন গ্যারিঞ্চা। বোটাফোগো,করিন্থিয়াস,এথলেটিকো জুনিয়র, ফ্লামেনগো সহ ৬ টি ক্লাবের হয়ে ৬৯২ টি ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ২৭৬ টি। তার এই বর্ণাট্য ফুটবল ক্যারিয়ারে নিজের ঝুলিতে পুরেছেন ২টি ফিফা বিশ্বকাপ সহ জাতীয় দল ও ক্লাব মিলিয়ে ২৩ টি শিরোপা। দুঃখজনকভাবে শেষ জীবনে এক সড়ক দূর্ঘটনায় শারীরিকভবে মারাত্মক অসুস্থতায় ভোগতে থাকেন তিনি। এবং ১৯৮৩ সালের ২০ জানুয়ারীতে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন।