বিকল্পধারার পিতা-পুত্রের চিত্রনাট্য বৃথা করে দিয়ে ড. কামাল অসাধ্য সাধন করে ফেললেন। একই ছাতার নিচে নিয়ে আসলেন গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিকে। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় জন্য যে বি. চৌধুরী অযোগ্য নেতা এবং তার পুত্র যে ক্ষমতাসীনদের এজেন্ট সেটি জনগণের কাছে ছিল পরিস্কার। কেননা, বিএনপি বারবার একক দল হিসেবে যোগ দেয়ার কথা বললেও তা যেন পিতা-পুত্রের কর্ণগোচর হচ্ছিল না। বারবার, ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে ধার করা ‘স্বাধীনতা বিরোধী’ টার্ম ব্যবহার করে যাচ্ছিলেন। অবশেষে তাদেরকে বাদ দিয়েই জাতীয় ঐক্য সম্পন্ন হল, ৭ দফা দাবিকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে শক্তিশালী সেটা বোঝা গিয়েছিল, প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে সিপিবি’র দরজায় ওয়বায়দুল কাদেরের দৌড়-ঝাঁপে। এবার ওবায়দুল কাদেরের টার্গেট হয়ে দাঁড়ালো ড. কামাল। আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা যেন সবখানেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাকে যেভাবেই হোক ক্ষমতার মঞ্চ থেকে হঠানোই ড. কামালের মূল উদ্দেশ্য। কামাল হোসেনের টার্গেট সম্ভবত ক্ষমতায় যাওয়া নয়। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানো।”
আজ মঙ্গলবার নির্মাণাধীন বিআরটিএ ভবনের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, “বিএনপি-গণফোরাম-নাগরিক ঐক্য ও জেএসডি নিয়ে সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে সুকৌশলে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টকে বের করে দেয়া হয়েছে।” প্রিয় বুলি বলার মতো কেউ আর ঐক্যফ্রন্টে থাকলো না বলেই হয়তো তিনি খানিকটা চিন্তিত।
এই চিন্তার ছাপ আরও স্পষ্ট হল যখন তিনি উপলদ্ধি করলেন, ঐক্যফ্রন্টের নির্দেশনা দেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক জিয়া। ড. কামাল হোসেনকে তাই প্রশ্ন রেখে বললেন, “এই ধরণের ঐক্যটা আসলে কে চালাবে? মূল দল হচ্ছে বিএনপি। আর বিএনপি চালায় কে? বিএনপির চেয়ারপারসন এখন জেলে। ভাইস চেয়ারম্যান হচ্ছেন তারেক রহমান। তারেক রহমাসের অঙুলি হেলনেই চলবে এটা।” তবে এখানেই কি তাদের ভয়?
তবে যাইহোক না কেন? জনগণ তাকিয়ে আচ্ছে ঐক্যের দিকে। গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের আশায়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টই পারে বৃহত্তর প্রতিরোধের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে। দেখার বিষয়, কতটুকু এগোতে পারে ঐক্যফ্রন্ট?