বিকল্পধারাকে বাদ দিয়েই ৭ দফা দাবি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যাত্রা শুরু

বিকল্পধারাকে বাদ দিয়েই ৭ দফা দাবি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যাত্রা শুরু

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। ফ্রন্টের ঘোষণায় নির্বাচনের আগে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দিয়ে সর্বদলীয় গ্রহণযোগ্য সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবি করা হয়েছে।

এতদিন বি. চৌধুরী ও  মাহি বি. চৌধুরীর অবস্থান ও জামায়াত প্রশ্নে তাদের সরকারের সুরে কথা বলা ও ভারতপন্থী অবস্থানের কারণে ঐক্য প্রক্রিয়ার অগ্রগতি থমকে ছিল। তাদের মনোবাসনায় সরকার ও ভারতীয় পরিকল্পনা স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হলে সমালোচনা শুরু হয় চৌধুরীদের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে। অবশেষে তাদের বাদ দিয়েই যাত্রা শুরু করল ঐক্যফ্রন্ট। এদিকে আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে বিকল্পধারা জানিয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গ ত্যাগ না করলে আজ থেকে বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠকে বসবে না বিকল্পধারা।

যদিও ঐক্য নিয়ে নিজেদের অবস্থান বারবার স্পষ্ট করে জানিয়েছে বিএনপি। এটাকে কোন ভাবেই জামায়াতকে সাথে নিয়ে ঐক্য হচ্ছে এমন মনে করার কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে আসছে দলটি। জামায়াত ভোটের লড়াইয়ে বিএনপির সঙ্গী আর ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি একক দল হিসেবে ৭ দফার ভিত্তিতে যোগ দিচ্ছে কাজেই এখানে জামায়াত প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য নিয়ে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ নেই বলেই জানিয়েছে দলটি। এই অবস্থান পরিস্কার করার পরেই ঐক্যফ্রন্ট যাত্রা শুরু করছো আর এই প্রক্রিয়া থেকে ছিটকে পড়ল বিকল্পধারা।

এমন পরিস্থিতিতে জামায়াতকে হটাতে গিয়ে বিকল্পধারা নিজেই ছিটকে পড়ল ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে। যে ৭ দফা দাবিকে ঘিরে ঐক্যফ্রন্ট মাঠে থাকবে বলে জানায় তা হল:

১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

২. নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা দেওয়া।

৩. বাক্, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

৪. কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন, সামাজিক গণমাধ্যমে মতপ্রকাশের অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা।

৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া।

৬. নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং সম্পূর্ণ নির্বাচনপ্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাঁদের ওপর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ না করা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করা।

৭. তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া।

আগামী দিনে এই ঐক্যফ্রন্ট ও লীগ মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র উদ্ধারের সংগ্রামে নামতে যাচ্ছে। জনগণ গণতন্ত্রের বিজয় দেখার অপেক্ষায়।