পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে বহিস্কার

পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে বহিস্কার

ইসলামাবাদে বাংলাদেশ সরকারের নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই কমিশনার তারেক আহসানকে বরখাস্ত করেছেন ইমরান খান। আট মাস আগে বাংলাদেশে পাকিস্তানের নতুন হাই কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে সাকলাইন সায়েদাকে। কিন্তু আট মাসেও তার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ঢাকা থেকে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। চলতি বছরের শুরুর দিকে এ পদ থেকে রফিকুজ্জামান সিদ্দিকীয় অবসরে যাওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারি থেকে পদটি পুরোপুরি শূন্য রয়েছে। মূলত তার এ অবসরের ফলে সাকলাইন সায়েদাকে বাংলাদেশে পাকিস্তানের নতুন হাই কমিশনার হিসেবে মনোনীত করা হয়। এতদিন তিনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র বিভাগের পিবিএস-২০ এর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। কেন তাকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না তা নিয়ে কোন কারণও দেখাতে পারেনি ঢাকা। এরই জের ধরে পাকিস্তানে নিযুক্ত হাই কমিশনারকে বরখাস্ত করল ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের মিডিয়া খবরে বলেছে,  বাংলাদেশের কাছে নতুন হাই কমিশনার হিসেবে সাকলাইন সায়েদার মনোনয়ন সংক্রান্ত বিষয়াদি বছরের শুরুর দিকেই পাঠিয়ে দেয় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে বারংবার ঢাকার কাছে ‘নোট ভারবালস’ পাঠানো সত্ত্বেও ঢাকা এ বিষয়ে কোনো সাড়া দেয় নি। এমনকি এ বিষয়টি বিলম্বের কোনো যথোপযুক্ত কারণও জানায়নি ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক হাই কমিশনার রফিউজামান সিদ্দিকী বলেন, ‘এ বিষয়ে সম্মতি জানাতে বড়জোর এক মাস সময় লাগে।’

সাবেক এ হাই কমিশনার আরও বলছেন, ‘এক্ষেত্রে ঢাকা যে বিলম্ব করছে তার অর্থ হলো বাংলাদেশ সরকার সাকলাইন সায়েদাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এর প্রধান কারণ অবশ্যই ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া কোনো ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে না।’

সে সময় তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পুরোপুরি পাকিস্তানবিরোধী আখ্যা দিয়ে বলেন শেখ হাসিনা চলেন নয়া দিল্লির কথা মতো।

এ বিষয়ে রফিউজামান সিদ্দিকী আরও উল্লেখ করেন, ‘এই নিয়োগ নিয়ে অধিক সময় লাগতে পারে। তবে দুটি দেশের মধ্যে এই রকম দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য এই বিলম্ব কোনো সময়ই ভাল কিছু বয়ে আনবে না।’

অবশেষে পাকিস্তানের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বরখাস্ত হলেন তারেক আহসান। এদিকে পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের বৈদেশিক ও বাণিজ্য যোগাযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কিছু নাগরিক। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনার কূটনৈতিক দিক নিয়েও আলোচনা চলছে।

ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পরে দক্ষিণ এশিয়াতে একচেটিয়া ভারতের প্রভাবের অবসান হতে যাচ্ছে বলেও অনেকে মন্তব্য করেন। বাংলাদেশে পাকিস্তান বিরোধীতার রাজনীতি বেশ সরব। কিন্তু সার্কভুক্ত এই দেশটির সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হলে তা রাজনৈতিক তো বটেই বাণিজ্যেও প্রভাব রাখবে। এখন দেখার পালা বাংলাদেশ কি পদক্ষেপ নেয়।