জামায়াত প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যে সংকট তৈরি হয়েছিল তাতে কৌশলগত ভাবে বিএনপি এগিয়ে গেল। গত রবিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্বাচনী দাবি আদায়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিন্ন আন্দোলন-কর্মসূচি পালন করবে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর (বি চৌধুরী) নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট ও বিএনপি। অন্যদিকে জামায়াত ২০ দলীয় জোটের সদস্য দল হিসেবে ভোটের মাঠে বিএনপির সাথে থাকবে।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সাথে জোটে যাচ্ছে একক দল হিসেবে বিএনপি। আর বিএনপির সাথে ২০ দলীয় জোটের সদস্য দল হিসেবে থেকে যাচ্ছে জামায়াত। বি. চৌধুরী ও ডা. কামালদের আপত্তির কারণে যখন জামায়াত নিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়ায় সংকট তৈরি হয়েছিল তখন এমন কৌশলী সিদ্ধান্ত বিএনপিকে কিছুটা এগিয়ে দিলো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে বিএনপি এককভাবে বৃহত্তর জোটে থাকবে। তাদের নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট বৃহত্তর জোটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে না। নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামী ২০-দলীয় জোটের শরিক হিসেবে বিএনপির সঙ্গে থাকবে।
গতকালের বৈঠকে ছিলেন বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান। যিনি জামায়াত প্রশ্নে সব সময়ই সোচ্চার ছিলেন। যদিও রাজনৈতিক ইতিহাস গবেষক জনাব মহিউদ্দিন আহমেদ এক টকশোতে বলেছেন, ১৯৭১ সালে আবদুল মান্নান পাকিস্তানের পক্ষেই ছিলেন। এখন তার অতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রহস্য কি তা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। তবে এই কৌশলী সিদ্ধান্তের পরে তিনি মিডিয়াকে বলেছেন, “মাত্র তো ঐক্য প্রক্রিয়ার যাত্রা শুরু হয়েছে। এখনো অনেক পথ বাকি আছে। আমরা নীতিগতভাবে মেনে নিয়েছি, বিএনপি আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করবে। নির্বাচনের হিসাব-নিকাশের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।”
তিনি আরও বলেন, যেহেতু এই আন্দোলনে বিএনপির সাথে জামায়াত থাকবে না ফলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। নির্বাচনের জোটে কার সাথেকে আছে তা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের সম্পর্ক থাকবে না। থাকবে বিএনপির সঙ্গে। জাতীয় ঐক্য, যুক্তফ্রন্ট ও বিএনপির দাবি অভিন্ন হওয়ায় তারা একসঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গত ২২ সেপ্টেম্বর সমাবেশের মাধ্যমে বৃহত্তর সরকারবিরোধী এই জোটের যাত্রা শুরু হয়।