আরেকবার বর্তমান সরকারের আধিপত্যবাদী চেতনা প্রকাশিত হল। সংবাদকর্মী ও আপামর জনগণের আপত্তি-উৎকণ্ঠাকে গ্রাহ্য না করেই বিতর্কিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ বিলে স্বাক্ষর করলেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। আজ সোমবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি এ বিলে স্বাক্ষর করেন যা বিলটিকে আইনে পরিণত করলো। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদে পাশ হওয়া বিলগুলো সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছিলেন। সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদে কোনও বিল গৃহীত হলে তা সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা হয়। রাষ্ট্রপতি ওই বিলে ১৫ দিনের মধ্যে সম্মতি প্রদান করবেন। অবশ্য তিনি চাইলে কোনও বিশেষ বিধান পুনর্বিবেচনা বা সংশোধনীর অনুরোধ করে একটি বার্তাসহ সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কয়েকটি ধারা নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের তীব্র আপত্তি রয়েছে। এসব ধারা গণমাধ্যমের পেশাগত স্বাধীনতার জন্য হুমকি বলে তারা আইনটি প্রণয়ণের উদ্যোগ থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপেই বিরোধিতা করেছে। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অংশ নিয়ে তারা সুনির্দিষ্ট ৮টি ধারায় আপত্তি করে তা সংশোধনেরও সুপারিশ করে। তবে, আইন পাশের সময় সেই সুপারিশ আমলে নেওয়া হয়নি বলে সম্পাদক পরিষদসহ গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের থেকে আপত্তি তোলা হয়। আইনটির প্রতিবাদে তারা কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দেন।
পরে তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সাংবাদিকদের সাথে বৈঠক করে মন্ত্রিসভায় বিলটি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দিলেও এখন এটা পরিস্কার যে, কোন আলোচনাই হয়নি।
এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল-২০১৮ পাশ হয়। পাশ হওয়া বিলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের আলোচিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা বাতিল করা হয়েছে। তবে ওই আইনটির ধারাগুলো নতুন আইনের বিভিন্ন ধারায় যুক্ত করা হয়েছে। অন্য দিকে, এতে জনগণের তথ্য অধিকার এবং সাংবাদিকদের পেশাগত স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে।
আইন প্রয়োগে কর্মকর্তাদের দায়মুক্তি দেয়া, বিনা ওয়ারেন্টে তল্লাশি ও গ্রেফতারের পাশাপাশি ক্ষতিকর তথ্য উপাত্ত অপসারণের বিধান রাখা হয়েছে।