প্রথমে ফোনে তাকে পাওয়া যায়নি। একটু পরে আবার কল করে পাওয়া যায়। ফোনে তাকে জানানোর পরে নিজের ব্লগে তিনি নোবেল পুরস্কার পাওয়ায় নিজের অনুভূতিটা লিখে টুইট করেন। বক্তব্যটি হুবহু অনুবাদ করে জবানের পাঠকদের জন্য ছাপা হল:
সকালে উঠে নোবেল কমিটি আমাকে জানায় আমি ২০১৮ ‘র শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে সহ বিজেতা।এই খবরটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য ছিল। এটা ছিল আমার কাছে ভীষণ সন্মানের। আমি আমার পুরস্কার এবং এর সন্মান সকল ইয়াজীদি, কুর্দি,ইরাকী,সংখ্যালঘু সহ বিশ্বের সকল যৌন নিপীড়িত মানুষের সাথে ভাগ করে নিতে চাই।
একজন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে আমি খুবই কৃতজ্ঞ। এখন আমার দ্বারা বিশ্ববাসীর মোনযোগ পাওয়াটা সহজ হবে। তাদের জানানো যাবে ইসলামিক স্টেট (আইসিস) কিভাবে ২০১৪ সাল থেকে ইয়াজীদিদের উপর অকল্পনীয় অত্যাচার আর গণহত্যা চালিয়ে আসছে। অনেক ইয়াজীদি এই পুরস্কারের দিকে চেয়ে হয়ত তাদের হারিয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যের কথা ভাববে, যার সংখ্যা হয়ত অগণিত। এই পুরস্কার সেই ১৩০০ নারী ও শিশুর কথা মনে করিয়ে দিবে যারা আইসিসের কাছে এখনও বন্দি আছে। অন্য সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মত ইয়াজিদীদেরও নিপীড়িত হওয়ার ইতিহাস অনেক পুরনো। বিশেষ করে নারীরা আগে থেকেই যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছিলো। এবং এখনো হচ্ছেন।
আমি আমার মায়ের কথা চিন্তা করি, চিন্তা করি সেই বাচ্চাগুলোর কথা যাদের সাথে আমি বেড়ে উঠেছি। সবাইকেই হত্যা করেছে ইসলামিক স্টেট এর সন্ত্রাসীরা। এদের সন্মানে আমি কিছু করতে চাই। সংখ্যালঘু দের উপর নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। আমাদের সকলকে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে একসাথে কাজ করতে হবে। আমাদের প্রমাণ করতে হবে যে, গণহত্যার এই প্রক্রিয়া একদিন ব্যার্থ হবেই। আর সকল অপরাধী কে শাস্তি পেতে হবে। সকল নির্যাতিতরাই একদিন বিচার পাবে।
গণহত্যায় বিধ্বস্ত সম্প্রদায়ের পুনর্বাসনে আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। সহিংসতায় বেচে যাওয়া সকলের নিরাপদে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের মাতবতার দিকে আরো মনোযোগী হতে হবে এবং রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক বিভেদ কমাতে হবে। আমরা শুধু নারী, শিশু এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তায় করবো না বরং আমরা তা বাস্তবায়ন করব। আমরা যুদ্ধ নয়, মানবতাকে প্রাধান্য দিয়ে আমাদের এই কাজ ধারাবাহিক ভাবে করে যাবো।
অভিন্দন আমারসহ বিজেতা ডঃ মুকওয়েজি কে যিনি তার পুরো জীবন ব্যয় করেছেন নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে কাজ করে।
বর্তমান নোবেল কমিটিকে ধন্যবাদ আমাকে এই সন্মান দেয়ার জন্য। আমি ওয়াশিংটনে একটি সাংবাদিক সন্মেলন ডাকবো এবং সেখানে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানাবো।